জাতীয় পর্যায়ে তালযন্ত্রে পুরস্কার পেয়েছে সাংস্কৃতিক কুষ্টিয়ার ছেলে অরিত্র পাল। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির আয়োজনে জাতীয় পর্যায়ে শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০১৮ তে ‘ক’ গ্র”পে তালযন্ত্রে (তবলায়) কুষ্টিয়ার ছেলে অরিত্র পাল এ কৃতিত্ব অর্জন করেন। প্রতিযোগিতায় হারমোনিয়ামে নাগমা বাজিয়ে সহযোগিতা করেন অরিত্র পাল’র দিদি অমৃতা পাল। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহামান্য রাষ্টপতি আবদুল হামিদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং পরিচালক আনজীর লিটন স্বাক্ষরিত সনদপত্র অরিত্র পালের হাতে তুলে দেন। সেই সাথে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় অরিত্র পালকে মেডেল পড়িয়ে পুরস্কৃত করেন। অরিত্র পাল’র বাবা নড়াইল’র উপজেলা শিক্ষা অফিসার অসিত বরণ পাল জানান, তানসেন সঙ্গীত একাডেমির পরিচালক ওস্তাদ মতিয়ার রহমানের কাছে মেয়ে অমৃতা পাল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করাকালীন সময়ে তবলার প্রতি অরিত্র’র আকর্শন সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে রিক্সা থেকে পরে গিয়ে হাত ভেঙে যায় অরিত্র’র। চিকিৎসক হাতের ব্যায়াম করতে বলে। আর এ থেকে অরিত্র তবলার প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং তবলা প্রশিক্ষণ শুরু করে। অরিত্র পাল’র মা রত্না পাল জানান, দেবী সরস্বতীর আর্শিবাদে জ্ঞান বিদ্যায় পূর্ণতা লাভ করে অরিত্র কুষ্টিয়া তথা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে এটিই প্রত্যাশা। অরিত্র পালের তালযন্ত্র প্রশিক্ষক বিশিষ্ট তবলা শিল্পী আকাশ চক্রবর্তী জানান, কুষ্টিয়াতে এই প্রথমবারের মত কেউ তবলায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করলো। আর সেটা হলো অরিত্র। কুষ্টিয়াতে অনেক সঙ্গীত শিল্পী আছে , কিন্তু তালযন্ত্রের শিল্পীর সংখ্যা অনেক কম। তাই অরিত্র’র জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভে তালযন্ত্রের প্রতি নতুন প্রজন্ম উৎসাহ পাবে। এটি আমাদের কুষ্টিয়া বাসীর জন্য গেীরবের বিষয়। জাতীয় পর্যায়ে তালযন্ত্রে পুরস্কার প্রাপ্ত অরিত্র পাল জানান, আমার দিদির অনুপ্রেরণায় আমার তালযন্ত্র শিক্ষণ। বাবা ও মায়ের সহযোগিতা পেয়েছি, তাই আজ জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করতে পেরেছে। আমি সকলের আর্শিবাদ প্রার্থী। উল্লেখ্য যে, অরিত্র পাল কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রভাতি শাখার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। সে কুষ্টিয়া শহরের ১১৫/৭৬ থানাপাড়া এনএস রোডের বাসিন্দা।
এদিকে তার পুরস্কার প্রাপ্তিতে স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠী, প্রতিবেশী ও কুষ্টিয়ার সাংস্কিৃতক অঙ্গনের মানুষরা আনন্দ প্রকাশ করেছে। তাকে অভিনন্দন জানিয়ে তারা বলেছেন কুষ্টিয়ার নরম মাটিতে আরেকজন সাংস্কৃতিক মানুষ তৈরী হল। কুষ্টিয়া যে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী তা আরেকবার প্রমাণিত হল এবং এর মাধ্যমে বহুমাত্রিক ঐতিহ্যে লালিত কুষ্টিয়ার ইতিহাস আরেকটু সমৃদ্ধ হবে।
প্রিতম মজুমদার
কুষ্টিয়া, বিডি টাইমস্ নিউজ