প্লাস্টিক বর্জে্যর বহুমুখী পুনঃব্যবহারে সাশ্রয় হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা। বিটুমিন ও জ্বালানি তেল উৎপাদনের সুযোগ থাকায় এখাতে বড় সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইকেল নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব এলে সরকার বিবেচনা করবে।

বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিকের ব্যবহার বাড়ছে। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। এছাড়া অটোমোবাইল ও ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব খাতের অন্যতম কাঁচামাল প্লাস্টিক। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে নতুন করে প্লাস্টিক উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে নতুন নতুন পণ্য উৎপদানের।

বাংলাদেশ প্লাস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, “বিটুমিন, ফুয়েল কিংবা কংক্রিট ব্লক যেটাই বলুন প্রচুর পরিমাণ আইটেম হয়। সরকার যদি দু’একটা পাইলট প্রজেক্ট করে দেখিয়ে দেয় যে বিনিয়োগ করলে রিটার্নটা ভালো। তাহলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে এবং আমাদের রি-সাইকিলিং দিয়ে নিত্যনতুন পণ্য উৎপাদন হবে।”

প্লাস্টিক ও পলিথিন থেকে জ্বালানি তেল ও মিথেন গ্যাস উৎপাদন করা যায়। আবার প্লাস্টিক থেকে তৈরি হয় সড়কের বিটুমিনও। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুলে প্লাস্টিক বর্জ্য দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারে।

অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়েজ্জম বলেন, “প্রনোদনা দেওয়া হয়ে থাকে এই প্রোডাক্টে, অর্থাৎ আপনি যদি রপ্তানি করতে তাহলে সুবিধাটি পাবেন। কিন্তু কোনো কোনো দরকার হচ্ছে উদ্যোগের শুরু থেকে তাকে সুবিধা দেওয়া। প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে এর সংগ্রহের পদ্ধতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বর্জ্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সংগ্রহকারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া জরুরি, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। প্লাস্টিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এজাজ আহমদ বলেন, “ময়লা হয়ে গেলো, ওটা যদি আমরা সংগ্রহ করতে পারি তাহলে ওটা থেকেও আরডিএফ, ফুয়েল বা রাস্তায়ও ব্যবহার করতে পারি। এই সম্পূর্ণ জিনিসটা বিনিয়োগের মাধ্যমে এটাকে তুলে আনতে। দেশ এবং অর্থনীতির কল্যাণে যেকোন ধরনের প্রকল্পের বিস্তারিত ও সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে বিবেচনা করা হবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পাইলট প্রজেক্ট সরকার নিতে পারে, কিন্তু আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাটা দরকার। যাতে পুরো জিনিসটা দেখতে পারি, একটু সময় নিতে হলেও যদি চূড়ান্ত জায়গায় যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে তাদের পুরো প্রজেক্ট নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

প্লাস্টিক বর্জে্যর পুনঃব্যবহার বা নতুন পণ্য উৎপাদনে সরকার এবং ব্যক্তিখাতের সমন্বিত উদ্যোগ থাকা দরকার বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে