পদ্মা সেতু আমাদের আবেগের নাম। বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক। বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে এই পদ্মাসেতু। আইপিডব্লিউই-২০২৩ সম্মেলনে আজ বুধবার (৪’ই জানুয়রি) এ স্বীকৃতি দেবে বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকৌশল সংগঠন আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স। আগামী(৪-৬)’ই জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে তিন দিনের আন্তর্জাতিক পানি সম্পদ ও পরিবেশ সম্মেলন আইপিডব্লিউই-২০২৩। ঢাকার সঙ্গে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের রেস্টনে আইপিডব্লিউই-২০২৩ অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে বিশ্বের ২১ দেশের পানি বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের সম্মিলন ঘটবে। এএসসিইর সভাপতি মারিয়া লেহমান সম্মেলনে উপস্থিত থেকে এ স্বীকৃতি দেবেন।বুয়েট কাউন্সিল বিল্ডিংয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বহুপাক্ষিক বৈজ্ঞানিক আলোচনাই বিশ্বকে আরও এগিয়ে নেবে। সেখানে এ বিস্ময়কর পদ্মাসেতু তৈরির অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রতিটি দেশই সম্মেলনে অনেক কিছু জানতে পারবে।

সম্মেলনের আয়োজক ও আন্তর্জাতিক পানি বিশেষজ্ঞ ড. সুফিয়ান খন্দকার জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে বহু বাধা এসেছে। তবে এটা কোনো রাজনৈতিক বাধা নয়। এটা ছিল পদ্মার পানির স্রোতের বাধা। এ জন্য নদী শাসন করতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে হিমশিম খেতে হয়েছে। বিশ্বের আর কোনো সেতু এমন বাধার সম্মুখীন হয়নি। এছাড়া পদ্মা সেতু নির্মাণে এ পর্যন্ত যত প্রকৌশল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, তা বিশ্বের কোনো সেতুতে হয়নি। বিশ্বের বড় বড় সেতুর স্প্যানের চেয়ে পদ্মা সেতুর স্প্যানের আয়তন কয়েকগুণ বেশি। প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০ দশমিক ১২ মিটার এবং চওড়ায় ২২ দশমিক পাঁচ মিটার।

এছাড়া, পদ্মা সেতু গভীরতাযুক্ত বিশ্বের গভীরতম পাইলের সেতু। এসব কারণে বিশ্বের অন্যতম কঠিন স্থাপত্যশৈলী হিসাবে পদ্মা সেতুকে স্বীকৃতি দেবে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্স (এএসসিই)। ঢাকার সম্মেলনে যোগ দিতে এএসসিইর প্রেসিডেন্ট মারিয়া লেহমান এসেছেন। তিনি আরও বলেন, এ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা সমৃদ্ধ হবে। এছাড়া বাংলাদেশ আরও নানাভাবে উপকৃত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আইডব্লিউএফএম-এর পরিচালক অধ্যাপক একেএম সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত এবং এটি অংশগ্রহণকারীদের তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে সাহায্য করবে। এ সময় মারিয়া লেহম্যান উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনের এবারের থিম হলো-‘জলবায়ু পরিবর্তনের সময়ে ঝুঁকি ও স্থিতিস্থাপকতা। ’ ১৩ টি দেশের অংশগ্রহণকারীরা ২৪টি প্রযুক্তিগত অধিবেশনে ১৪৫টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন। ঢাকায় সম্মেলনের বিষয়গুলো হলো বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ (বিডিপি ২১০০), পদ্মা সেতু নির্মাণ : চ্যালেঞ্জ ও সমাধান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রথম সারিতে বাংলাদেশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে