বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সারা বিশ্বে মোট ৬৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। যা গত বছরের তুলনায় ২০ জন বেশি। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্টস আইএফজের নতুন প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রাসেলস-ভিত্তিক সংস্থাটি জাতিসংঘের মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন বলছে, এই বছর খরব সংগ্রহের দায়ে সাজা হয়েছে ৩৭৫’জন গণমাধ্যমকর্মীর। ইউক্রেনে রুশ অভিযান, হাইতিতে বিশৃঙ্খলা এবং মেক্সিকোতে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা ক্রমবর্ধমান সহিংসতার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ২০২২ সালে সাংবাদিক নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া, বেড়েছে নির্যাতন-নিপীড়ন। শুক্রবার বেলজিয়াম ভিত্তিক সংগঠন আইএফজে জানায়, এই বছর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে ৬৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৪৭’জন। ইউক্রেনে যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ১২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ইউক্রেনীয় সাংবাদিক। এছাড়া, কিছু বিদেশি সাংবাদিকও মারা গেছেন। অধিকাংশ মৃত্যুই ঘটেছে যুদ্ধের প্রথম সপ্তাহগুলোতে।
আইএফজের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ন্যাক্কারজনক ভাবে বেড়েছে। এই বছর ৩৭৫ জন গণমাধ্যমকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারাবন্দিদের বেশির ভাগই চীন, মিয়ানমার, তুরস্ক, ইরান ও বেলারুশের। এদিকে, প্রতিবদেনে আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। গত ১১’ই মে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
আইএফজে জানিয়েছে, পাকিস্তানে এ বছর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিকের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। সংস্থাটি কলম্বিয়ার সাংবাদিকদের জন্য নতুন হুমকি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া নতুন নেতৃত্ব থাকা সত্ত্বেও ফিলিপাইনে সাংবাদিকদের জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছে সংস্থাটি। আইএফজে আরও বলছে মেক্সিকোতে অপরাধী চক্রগুলোর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও হাইতিতে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভেঙে পরার কারণেও নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। গণমাধ্যম কর্মীদের হত্যার সংখ্যা বাড়ার জেরে সরকারগুলোকে সাংবাদিকদের পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। ব্রাসেলস-ভিত্তিক আইএফজে ১৪০টির বেশি দেশে ট্রেড ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়াশনের ৬ লাখ গণমাধ্যম পেশাদারদের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে। সব মিলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান আইএফজের।