মহাকাশে পাঠানোর প্রস্তুতি চূড়ান্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাড থেকে বৃহস্পতিবার রাতে উৎক্ষেপণ করা হবে এই স্যাটেলাইট। উৎক্ষেপক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স জানায়, বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ভোর ৪টা ২২ মিনিট পর্যন্ত চলবে স্যাটেলাইট পাঠানোর প্রক্রিয়া।

পৃথিবীর ৩৬ হাজার কিলোমিটার ওপর দিয়ে পাক খাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। তবে পৃথিবী থেকে দূর আকাশে স্থির দেখা যাবে এর অবস্থান। কারণ এই স্যাটেলাইট পৃথিবীর ঘূর্ণন গতির সঙ্গে সমানতাল রেখে ঘুরবে নিজের কক্ষপথে।বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটি নির্মাণ করেছে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান তালেস এলিনিয়া স্পেস। আর একে কক্ষপথে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি স্পেসএক্স। সর্বাধুনিক ফ্যালকন নাইনের ব্লক ফাইভ মডেলের রকেটের সাহায্যে ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ প্যাড থেকে উড়বে স্যাটেলাইটটি।

তিন হাজার ৫০০ কেজির স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে পাঠাতে রকেটের দুটি অংশ পর্যায়ক্রমে সক্রিয় হবে। ফ্যালকন নাইন রকেটের একেবারে ওপরের অংশে থাকবে স্যাটেলাইট তারপরেরটি অ্যাডাপটর। আর এরপর থাকবে স্টেজ- টু এবং সবচেয়ে নিচে স্টেজ-ওয়ান।উৎক্ষেপনের শুরুতে তরল অক্সিজেন এবং রকেট গ্রেড কেরোসিন আরপি ওয়ানের বিক্রিয়া শুরু হয়ে প্রসারিত গ্যাস বের হবে প্রচন্ড বেগে। আর নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র মেনে অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটতে শুরু করবে ফ্যালকন নাইন।

মাত্র এক মিনিটের মধ্যে গতি পৌঁছাবে ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার কিলোমিটারে। এই পর্যায়টির নিয়ন্ত্রণ করবে রকেটের একেবারে নিচের অংশ বা স্টেজ ওয়ান। উৎক্ষেপণের প্রায় তিন মিনিট পর ভূপৃষ্ঠ থেকে থেকে ৭০ কিলোমিটার ওপরে পৌঁছে খুলে যাবে স্টেজ ওয়ান। বাকি অংশের গতি তখন ঘণ্টায় প্রায় আট হাজার কিলোমিটার। স্টেজ ওয়ান ফিরে আসবে পৃথিবীতে আর রকেটটির নিয়ন্ত্রণ তখন স্টেজ টুর কাছে। এটি আরো তীব্র গতিতে স্যাটেলাইটকে পৌঁছে দেবে নির্ধারিত কক্ষপথের দিকে। যাত্রা শুরুর প্রায় ৯ মিনিটের মাথায় পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার দূরে স্যাটেলাইটটি থেকে বিচ্ছিন্ন হবে স্টেজ টু। এ সময় এর গতিবেগ পৌঁছাবে ঘণ্টায় ৩৬ হাজার কিলোমিটারে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করে এটি সঠিকভাবে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরের কক্ষপথে স্থাপন করা হবে যাতে সময় লাগতে পারে প্রায় ৮ দিন। এরপরেই নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা হবে বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে। গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন। ১৫ বছর টানা কার্যকর থাকবে এই স্যাটেলাইট।

অনলাইন ডেস্ক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে