অরুণাচল প্রদেশের সীমান্ত পার হয়েছিল ১৩টি ইয়র্ক। যেগুলি ৭’দিন ছিল ভারতীয় জওয়ানদের হেফাজতে, উত্তপ্ত লাদাখ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে ইয়র্কগুলি নিয়ে, এগুলিকে গুপ্তচর হিসেবে পাঠিয়েছিল চীন!

চীন থেকে অরুণাচল সীমান্ত পার হয়ে এক পাল ইয়াক ভারতে প্রবেশ করেছিল। যেগুলি ইতিমধ্যেই চীনে ফেরত পাঠিয়েছে ভারতীয় জওয়ানরা। সেই ইয়াকগুলি প্রায় এক সপ্তাহ ছিল ভারতীয় জওয়ানদের অধীনে। এখন প্রশ্ন উঠছে এই ইয়াকগুলি কী নিছকই অবলা পশু ছিল? না কি এগুলিকে গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করেছিল চীনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। কারণ কাকতালিয় হলেও গত ৩১’শে অগাস্ট এই ইয়র্কগুলি চিন সীমান্ত পার হয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল। আর এই ঘটনা এমন সময় ঘটেছে যখন অরুণাচল থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে লাদাখে ভারতীয় সেনারা মুখোমুখি অবস্থান করছে চীনের সেনা সদস্যরা। গত ২৮’শে অগাস্টও চীনা সেনাবাহিনী পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্ররোচনা মূলক আচরণ করেছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল ভারত।

যদিও এখন পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে চীন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা ইয়র্কগুলি সম্পর্কে কোনও তথ্য জানান হয়নি। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনা বাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইয়র্কগুলিকে খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে সন্দেহভাজন কিছুই পাওয়া যায়নি। তবে আধুনিক বিশ্বে পশুকে গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহারের একাধিক নজির পাওয়া গেছে। কারণ বর্তমানে পশুর শরীরে গুপ্তচর সামগ্রী বা ট্র্যাকিংএর সরঞ্জাম লাগানো থাকে। আর সেই সরঞ্জামের মাধ্যেই অনেক দূর থেকে শক্রশিবিরের একাধিক তথ্য সহজেই হাতে পাওয়া যায়। গত বছর এপ্রিলে নরওয়ে উপকূলে একটি বেলুগা তিমি ধরা পড়েছিল। আর সেই তিমিটির মাথার চারপাশে একাধিক ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম লাগানো ছিল। যা সিগনাল দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে সেই তিমিটি কোন গুপ্ত মিশনে কাজ করছিল তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

মার্কিন নৌবাহিনী বেশ কয়েক দশক ধরেই পশুকে ব্যবহার করছে গুপ্ত মিশনগুলোর কাজে। সমুদ্রে নিচে খনি বা সাবমেরিন সনাক্ত করতে ডলফিনদের সাহায্য নেওয়া হয়। একাধিক ডলফিনের শরীরে লাগানো থাকে সেন্সর। কোল্ড ওয়ারের সময় রাশিয়ান সাবমেরিনের ওপর নজরদারীর কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল একদল ডলফিনকে। তবে কাজে লাগানোর আগে সেই ডলফিনগুলিকে রীতিমত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। দাবি করা হয় সাবেক সোভিয়েত রাশিয়ার ওপর নজরদারী চালানোর জন্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ব্যবহার করেছিল গৃহপালিত পশু হিসেবে পরিচিত বিড়ালকেও। আর সেই বিড়াল নাকি কোনও একটি অনুষ্ঠানের অডিও রেকর্ডিং করেছিল। আগামী দিনে যাতে হাঙ্গরের মত ভয়ঙ্কর প্রাণীদেরও গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেই দিকেই নজর দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর পুশদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ইসরায়েল। কারণ, ইসরায়েল তার প্রতিবেশী দেশে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য পশুদেরকে ব্যবহার করে বলেই দাবি করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৭’সালের ঘটনা, ইরানের পরমাণু প্রজেক্টগুলির তথ্য জোগাড়ের জন্য ইজরায়েল একদল কাঠবিড়ালিকে পাঠিয়ে দিয়েছিল ইরানে। একই অভিযোগ থেকে অবশ্য রেহাই পায়নি ইরান। আবার সৌদি আরব ইসরায়েলের ওপর নজরদারী চালানোর জন্য ব্যবহার করেছিল শকুন। শকুনের শরীরে লাগানো হয়েছে ক্যামেরা। তেমনই একটি শকুন ধরা পড়ে যেটির গায়ে লাগান ছিল তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যাগ। একই ধরনের শকুন ধরা পড়েছিল সুদানে। আর সেটির শরীরে লাগান ছিল ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম।

নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে