এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বেড়েছে ১৮ শতাংশ। জুলাই মাসে মোট লেনদেনের পরিমাণ ৩৭ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। যা আগের মাসের (জুন) তুলনায় ৫ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা বেশি। চলতি বছরের জুনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছিল ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। মোবাইল আর্থিক হিসাব (এমএফএস) নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠানে জুলাই শেষে মোট নিবন্ধিত এমএফএস হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ ৯১ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৮ জনে।

এমএফএসের নিয়ম অনুযায়ী, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন না করলে তাদের হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। সে হিসাবে জুলাইয়ে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার। জুলাইয়ে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা আগের মাস জুনের তুলনায় ১১ লাখ বা ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। গত জুনে সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ২৪ লাখ ৫৮ হাজার।

সর্বশেষ তথ্য মতে, জুলাইয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। জুনে এর পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি জুলাইয়ে লেনদেনের সংখ্যাও ১৪ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এমএফএস -এ গত জুলাইয়ে প্রতিদিন গড়ে ৭৩ লাখ ৩৫ হাজার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে আদান-প্রদান হয়েছে ১ হাজার ২০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। জুনে মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দেয়া হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য মাসে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে (ক্যাশ ইন) ১৩ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ২১ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। উত্তোলন করেছে (ক্যাশ আউট) ১২ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা, যা জুনের তুলনায় সাড়ে ১৩ শতাংশ বেশি। এমএফএসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৮ হাজার ১২২ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ প্রায় ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪৩ কোটি টাকায়। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৫১৯ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৭১ কোটি টাকা। সরকারি পরিশোধ ৪১৬ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬১৬ কোটি টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংসেবা চালু করে বিকাশ।

নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে