নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, প্রতিবন্ধী ও পুঙ্গু ভাতা সহ বিভন্ন ধরনের ৩০ হাজার ভাতাভোগীর ৪র্থ কিস্তির প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকারও বেশী অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। উপজেলার ৪১ হাজার সহজ-সরল অসহায় ভাতাভোগীর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ ভাতাভোগীর নগদ একাউন্টের মোবাইল নম্বরে কথা বলে বা ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ।

অভিনব এ ধরনের প্রতারণার শিকার হওয়া ভাতাভোগীদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌছেছে এবং নগদ ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারাচ্ছে। ফলে সমাজ সেবা কার্যালয়ের মান ক্ষুন্নের পাশাপাশি সরকারের এই উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানালেও মিলছেনা এর কোন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার। নগদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এ প্রতারণার সাথে পরোক্ষভাবে জড়িত আছে বলে নগদ ব্যাংকিং ব্যবস্থাকেই দায়ী করছে ভোক্তভোগীরা সহ সমাজ সেবা অফিসের কর্মকর্তাগণ। নান্দাইল উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, প্রতারক চক্ররা সমাজ সেবা অফিসের নাম ও কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে ভাতাভোগীদের নিকট ফোন দিয়ে বা ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে পিন বা ওটিপি সংগ্রহ করে ভাতাভোগীর অজান্তে বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্যাশ আউট করে অথবা পিটুপি সেন্ট মানি করে ভাতাভোগীদের টাকা তুলে নিচ্ছে। অত্র উপজেলায় ৪১ হাজার ভাতাভোগীর যেসমস্ত মোবাইল নম্বর সচল রয়েছে, তাদের প্রায় প্রত্যেককে ফোন দিয়ে একটি বিশাল সংখ্যার অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে ভোক্তভোগী সেতু আক্তার, বৃষ্টি ও নুর ইসলাম সহ আরও অনেকই জানাযায়, হঠাৎই তাদের মোবাইলে একটা কল আসে এবং সমাজ সেবা কর্মকর্তার নাম ও পরিচয় দিয়ে ভাতা হিসাবের সমস্যার কথা বলে পিন ও ওটিপি নাম্বার চাইলে তারা তা নির্বিঘেœ দিয়ে দেয়। পওে দেখতে পারে তাদের একাউন্টে টাকা নাই। পরে ভাতাভোগীরা সমাজ সেবা অফিসের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে উক্ত বিষয়টি পরিষ্কার হয় যে, তারা প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছে। উক্ত প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য এবং হয়রানিমুক্ত ভাতাভোগীর অর্থ প্রাপ্তি, সংরক্ষণ ও ব্যবহারের অধিকারের বিয়ষটি নির্বিঘেœ প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা সমাজ সেবা অফিস কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা অধিশাখার পরিচালক সহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখায় অবহিত করেছেন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল কাইয়ূমের সাথে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। ভাতাভোগীরা তাদের পিন নাম্বার ও ওটিপি দিয়ে দেওয়ায় এই কান্ড ঘটেছে। টাকা ফিরেয়ে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে তাদের মোবাইল নাম্বার চেঞ্জ করার প্রয়োজন। আর আমরা উক্ত প্রতারণার বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা নগদ ব্যাংকিং এর কেওয়াই সংরক্ষন ম্যানেজার মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের দুই-একজন ভাতাভোগীর অভিযোগ পেয়ে তা সমাধান করেছি। এখানে শতশত ভাতা ভোগীর সমস্যার কথা শুনেনি বা কোন অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া কোন ভাতাভোগী যদি তার পিন নম্বর বা ওটিপি যে কাউকে বলে দেয় অর্থাৎ গোপন রাখতে না পারে তাহলেতো আমাদের কিছু করার নাই।
ছবি-সংযুক্ত

শাহজাহান ফকির
নান্দাইল নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইমস নিউজ 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে