বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি বা তার নিচে কীভাবে নামানো যায় সেই লক্ষ্যে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে এক হয়েছেন বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের প্রতিনিধিরা। দুই সপ্তাহের এই সম্মেলনে বিশ্বনেতারা জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে এক মত হতে পারলে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারলেই বাঁচবে পৃথিবী, বাঁচবে আগামী প্রজন্ম। তাই এটিকে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের শেষ চেষ্টা বলেই মনে করছেন সম্মেলনের আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য।
এবারের এই শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতি যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী অলোক শর্মা বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি কমিয়ে আনতে না পারলে পুরো পৃথিবী যেমন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, তেমনি সমুদ্র সীমা বেড়ে অনেক দেশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে।এছাড়া তিনি বলেন “২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোর একটি চেষ্টা হয়েছিল। তবে তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। তবে এবারে তাপমাত্রায় নামিয়ে আনতে কপ-২৬ ই শেষ সুযোগ”।
এই সম্মেলনে বিশ্বনেতারা একমত হতে না পারলে পুরো পৃথিবী বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলেও মনে করছেন তিনি। রোববার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া এই সম্মেলনে একে একে দুইশর বেশি দেশের কাছে জানতে চাওয়া হবে, কীভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারবেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যকে। কারণ এই তিন দেশে কার্বন নি:সরণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। কার্বন নি:সরণে পিছিয়ে নেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭ টি দেশও।
তবে এবারের সম্মেলন নিয়ে আশাবাদী আয়োজক দেশ যুক্তরাজ্য। জ্বালানি কয়লাকে ইতিহাসের পাতায় নিয়ে যাবেন বলেও উল্লেখ করেছেন দেশটির মন্ত্রী অলোক শর্মা। একই সঙ্গে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নি:সরণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতি যুক্তরাজ্যের। তবে তা কতটুকু কার্যকর হবে তা নির্ভর করছে বাকি দেশগুলোর সঙ্গে মতৈক্যের ওপরে।
এ জন্য এবারের সম্মেলনে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি, কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করা, যতটা সম্ভব কম গাছ কাটা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে যত বেশি সম্ভব মানুষকে রক্ষার বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে দরিদ্র দেশগুলো। কারণ ধনী দেশ গুলোর কার্বন নি:সরণের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র দেশ। এসব দেশকে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অর্থ সহায়তা দেওয়ার আহ্বানও জানানো হবে ধনী দেশগুলোকে। যদিও এর আগেও একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ধনী দেশগুলো।
সূত্র: বিবিসি বাংলা