টাঙ্গাইল নিউজ ডেস্ক ।। কে এম মিঠুঃ টাঙ্গাইলে নাশকতার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ৩৬জন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে বুধবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হলে ১৮ জনের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অপর ১৮ জনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদের গত মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নলীন বাজারের যমুনা নদীর ঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এরা বঙ্গবন্ধু সেতু কেন্দ্রিক বিভিন্ন স্থাপনায় নাশকতামূল কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিল। গোপালপুর থানাধীন হেমনগর তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক আব্দুল মালেক খান বাদী হয়ে ৩৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গ্রেপ্তারকৃতদের হাজির করে ১৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট শামসুল আলম ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। যে ১৮ জনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে তারা হলেন- গোপালপুর উপজেলা জামায়াতের আমির গোলাম মোস্তফা রঞ্জু (৫৪), বেতবাড়ী গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মহিউদ্দিন (২২), দক্ষিণ গোপালপুরের আছর আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (৩০), বিষ্ণুপুর গ্রামের মেছের আলীর ছেলে আব্দুল আলিম (৩২), হাজরাবাড়ির গ্রামের মৃত মুনসুছ আলীর ছেলে ইউনুস আলী (৩৫), খানপাড়ার মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (৪২), চরপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মো. সোহাগ (১৯), চাতুটিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মাসুদ করিম (৪০), মির্জাপুর উত্তরপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে নাসির উদ্দিন (২৪), ফলদা চরপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্দুল আলিম (৩২), পাকুটিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে ছানোয়ার হোসেন (২৭), কোনাবাড়ী গ্রামের হেকমত আলীর ছেলে ফরমান আলী (২৮) ও লাল মাহমুদের ছেলে হেকমত আলী (২৮), জোতবাগল গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে বিজয় হোসেন (৩০) ও নিজাম উদ্দিনের ছেলে রাসেল রানা (২০), সোনামুই গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩০), মধুপুরভট্ট গ্রামের জোবেদ আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফা (৪৫), জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের মৃত মনছের আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫)।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৮ জনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরা হলেন- গোপালপুরের গাড়ালিয়া গ্রামের মৃত তৈয়ম শেখের ছেলে হাসেন আলী (৫৫), গাংগাপাড়া গ্রামের মৃত মনছব আলীর ছেলে আব্দুল মজিদ (৪৮), উত্তর গোপালপুরের বাহার আলীর ছেলে ইনসান আলী (২০), গোপালপুর কোনাবাড়ীর আব্দুস ছামাদের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৪৮), নবগ্রামের মৃত মোছাবালীর ছেলে আব্দুল মালেক (৬০), কোনাবাড়ী বাজারের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে নূর মোহাম্মদ (৬৪), লক্ষীপুরের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে হেলাল উদ্দিন (৬০), সোনামুই মধ্যপাড়ার মৃত দুদু শেখের ছেলে শিব্বীর আহমেদ (৫৯), গাংগাপাড়ার মৃত ছাদের আলীর ছেলে বাদশা মিয়া (৫৪), ভুটিয়া গ্রামের মৃত সবর উদ্দিনের ছেলে আলাউদ্দিন (৫৫), বাখুরিয়াবাড়ির মৃত জাবেদ আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (৬০), বেড়া ডাকুরির আব্দুস ছোবাহানের ছেলে আব্দুস ছবুর (৭০), মধ্য মান্দিয়া গ্রামের শাহেব আলীর ছেলে আশরাফ আলী (৪৪), ঝাওয়াইলের মৃত পাচু মাহমুদের ছেলে আব্দুল হাকিম (৭৭), পলশিয়ার মৃত পাষাণ আলীর ছেলে জুলহাস উদ্দিন (৫৬), মোহনপুরের মৃত শুক্কুর মাহমুদের ছেলে নাইম খন্দকার (৪৪), কোনাবাড়ী গ্রামের পাষাণ আলীর ছেলে আশরাফ আলী (৬৭) ও গাইবান্ধা জেলার মফিজুল হকের ছেলে শাহজাহান (৬২)।
গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশের বাড়ি গোপালপুর উপজেলায় এবং প্রায় সকলেই শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তারা দেশের সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর স্থাপনা বঙ্গবন্ধু সেতু কেন্দ্রিক নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা বনভোজনের নামে সেতু এলাকায় একাধিকবার রেকি করেছে। এর আগেও তারা নৌকা ভ্রমণে গিয়ে সরকার উৎখাতে বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করেছে এবং সরকারবিরোধী আপত্তিকর শ্লোগান দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে তারা নাশকতার অংশ হিসেবে যমুনা নদীতে নৌকা ভ্রমণের নামে রেকি করার জন্য গোপালপুর উপজেলার নলীন বাজারে একত্রিত হয়। গোপনসূত্রে সংবাদ পেয়ে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে হেমনগর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩৬ জনকে আটক করে। পরে তাদেরকে হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আনা হয়।
কে এম মিঠু,
টাঙ্গাইল নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ