দরজায় কডা নাড়ছে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। আর মাত্র তিনদিন পর শুরু হবে বাঙালি বইপ্রেমীদের প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা। পুরো মাসব্যাপী বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে চলবে লেখক, পাঠক ও দর্শনার্থীদের আনাগোনা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বই মেলা নিয়ে প্রস্তুতি অনেকটাই শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ।
মেলার আয়োজনে এবারো থাকবে নতুনত্ব। শিশুতোষ বইয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক বইও প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছেন প্রকাশকরা। মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখছেন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের কর্তারা। তারা জানালেন, অবকাঠামো শেষ হলেই ঝকঝকে বই শোভা পাবে এসব স্টলে। শিশুদের জন্য থাকবে বিশেষ কর্নার। কাঠ কাটা, জোড়া দেয়া, রং তুলির আঁচড় আর পেরেক- হাতুড়ির টুং টাং আওয়াজ বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গন আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে। তিনদিনে শেষ করতে হবে বইমেলার অবকাঠামো। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি বই মেলায় ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা।
সর্বোপরি দর্শনার্থীদের একটি মজার গ্রন্থমেলা উপহার দেয়ার কথা জানিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, এবার পুরো গ্রন্থমেলাকে আনা হচ্ছে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) এর আওতায়। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বছরের চাইতে এবারের মেলার স্টলগুলো রাখা হচ্ছে নির্দিষ্ট দূরত্বে। মেলার দর্শনার্থীরা যেন বই কেনার পাশাপশি এখানে একটু স্বস্তিতে বসতে পারে, একটু ঘুরাফেরা করতে পারে সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এব্যাপারে জানতে চাইলে, অমর একুশে গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বলেন, আজ সোমবার সাড়ে ৪ টার সময় বইমেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সস্মেলন করা হবে। এখানে সার্বিক বিষয় জানানে হবে। এবার গ্রন্থমেলার বিশেষত্ব ও গুরুত্ব তুলে ধরতে লেখক পরিচয় মঞ্চ রাখা হয়েছে। এখানে লেখকরা তাদের বই দর্শনার্থীদের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সুযোগ পাবে। দর্শকদের জন্যও থাকছে প্রশ্নোত্তর পর্ব। এর মাধ্যমে পাঠকরা প্রকাশিত ভালো বইগুলো নিয়ে জানতে পারবেন। মেলায় আগত দর্শনার্খীদের গাড়ি পার্কিং এর জন্য এবার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বাংলা একাডেমির তথ্য অনুয়ায়ী, গতবারের মত এবারও মেলা বিকাল ৩টায় শুরু হয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর আর কেউ মেলায় প্রবেশ করতে পারবে না। মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে দুই ক্যাটাগরিতে প্যাভিলিয়ন থাকবে ২৩টি। আর শিশু কর্নারে শিশু বিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য থাকছে ৭৫টি ইউনিট। প্যাভিলিয়ন বরাদ্ধ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-আগামী, অবসর, অনুপম, ঐতিহ্য, শোভা প্রকাশ, কথা প্রকাশ, অনন্যা, অন্বেষা, পাঠক সমাবেশ, অন্য প্রকাশ, সময়, মাওলা ব্রাদার্স, কাকলী প্রকাশনী, বাংলা প্রকাশ, উৎস প্রকাশন, অনিন্দ্য প্রকাশ, নালন্দা, জার্নিম্যান বুকস, প্রথমা, পার্ল পাবলিকেশন্স, ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ ও পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশ মিলিয়ে মোট ৬৯০টি ইউনিট বরাদ্দ পাবে ৪৫০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠান ১৯টি।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ