রাজধানীসহ সারাদেশেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। ঢাকায় বছরে পানির স্তর নামছে প্রায় ১০ ফুট করে। মাটির গভীরে বাড়ছে ফাঁকা জায়গা। মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পেই ধ্বসে যেতে পারে রাজধানীর ৮০ ভাগ ভবন। চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোরও পরিণতি হতে পারে একই। বিপর্যয় এড়াতে পানির স্তরের এই পতন রোধের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
দেশে একসময় ১৩শ’ নদ-নদী ছিল। এখন আছে প্রায় ৭শ’। উপরিভাগের পাশাপাশি কমছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। সারাদেশে চিত্র প্রায় একই। তবে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামের অবস্থা বেশি ভয়াবহ। কংক্রিটে ঢেকে যাচ্ছে মাটি। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও মাটির গভীরে যেতে পারছে না পানি। ভূগর্ভস্থ্য পানির স্তরও ওপরে উঠছে না।
ঢাকা ওয়াসা বলছে, দৈনিক ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে তাদের। এর মধ্যে পরিশোধনাগার থেকে আসে ৯১ কোটি লিটার। বাকি ১৭৯ কোটি লিটার তোলা হয় ভূগর্ভ থেকে। এদিকে, ঢাকায় বছরে প্রায় ১০ ফুট করে পানির স্তর নামছে। আগে ৪-৫শ’ ফুট গভীরে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া গেলেও এখন এলাকাভেদে বসাতে হচ্ছে ৯শ’ থেকে সাড়ে ৯শ’ ফুট পাইপ। তবুও মিলছে না পর্যাপ্ত পানি। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় মাটির নিচে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। যা একসময় ভূমিধ্বসের সৃষ্টি করতে পারে। আর মাঝারি ভূমিকম্পেই ধংসস্তূপে পরিণত হতে পারে জনবহুল ঢাকা। ওয়াটার এইড বাংলাদেশের টেনিক্যাল লিড মো. তাহমিদুল ইসলাম বলেন, “ভূগর্ভ থেকে পানি উঠানোর ফলে সেখানে ফাঁকা জায়গার সৃষ্টি হয়। যখন ফাঁকা জায়গাগুলো পূরণ হবে না তখন ভূমিধসের তৈরি হয়।
সমস্যা উত্তরণে সারাদেশে বৃষ্টির পানি ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি নদীর নাব্যতা ঠিক রাখার কথা বলছেন এই বিশেষজ্ঞ। এক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে শহরাঞ্চলে বৃষ্টির পানির রিজার্ভ ট্যাঙ্ক স্থাপন, শিল্পকারখানার বৃষ্টির পানি ব্যবহার বৃদ্ধি ও ভবন নির্মাণে পর্যাপ্ত জায়গা খালি রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মো. তাহমিদুল ইসলাম বলেন, “ব্যবহারও করতে হবে রিচার্জও করতে হবে। রিচার্জের জন্য যেভাবে টিউবওয়েল দিয়ে পানি উপরে উঠানো হয় ঠিক সেভাবেই পাইপ দিয়ে পানি নীচে দিতে হবে। গভীর নলকূপ দিয়ে উত্তোলন কমিয়ে পানির পুনঃব্যবহার এবং পাইপের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে পৌঁছে দেয়া গেলে পানির স্তরের এই পতন ঠেকানো সম্ভব বলছেন বিশেষজ্ঞরা।