পর্যটন মৌসুমের পাশাপাশি বিজয় দিবসসহ টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ভিড় করেছে কয়েক লাখ পর্যটক। ফাঁকা নেই কোনো হোটেল-মোটেল। এই সুযোগে অনেক হোটেলেই হাঁকা হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া। রেস্তোরাঁয় খাবারের দামও নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত। কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে সমুদ্র দর্শনে এসে অসহায় অবস্থায় পড়ছেন পর্যটকেরা।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শৈবাল পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা লোকারণ্য। কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিস্তীর্ণ সৈকতের বালিয়াড়িতে; ঘোড়ায় চড়ছেন, বালিয়াড়িতে আলপনা আঁকছেন। অনেক পর্যটককে ছাতার নিচে বসে সাগরের হাওয়ায় গা ভাসাতে দেখা গেছে।অনেকে মোবাইল ফোনে আনন্দের এ মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করছেন। অনেকেই সাগরজলে ঢেউয়ের তালে তাল মেলাচ্ছেন। শিশুদেরও দেখা গেছে বাবা-মায়ের সঙ্গে জলকেলিতে।

একদিনের সফরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পারুল বেগম এসেছেন কক্সবাজার। সুগন্ধা পয়েন্টের একটি কটেজের দুটি কক্ষ ভাড়া নেন তিনি। তবে দুই কক্ষের ফ্ল্যাটের ভাড়া নেয়া হয় ১৬ হাজার টাকা। বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল ফাঁকা না থাকায় বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয় পারুল বেগমকে।ব্যবসায়ীরা বলছেন, অফ সিজনে হোটেল ফাঁকা পড়ে থাকায় লোকসান গুনতে হয় তাদের। তাই মৌসুমে ভাড়া কিছুটা না বাড়ালে পোষানো যায় না।

এদিকে লাখো পর্যটকের ভিড়ের কারণে খাবার হোটেলেও নেয়া হচ্ছে চড়া দাম। শুধু ডাল-ভাত খেলেই দিতে হচ্ছে ৩ থেকে ৪শ টাকা। মাছের পিস বিক্রি হচ্ছে ৪শ টাকা বা আরও বেশি দামে। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের এহেন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ পর্যটকরা। কিন্তু তদারকির কেউ নেই।প্রশাসন বলছে, পর্যটকদের হয়রানির বিষয়ে মাঠে কাজ করছেন তারা। অনিয়মের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার হবে, জানালেন জেলার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে এই মুহূর্তে দেড়-লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করছেন। বিপুল সংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তা ও সেবা দিতে সীমিত সংখ্যক সদস্য নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদা পোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। তাদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও নজরদারি করছেন।

করোনার কারণে পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় কয়েক মাস কক্সবাজার ভ্রমনে আসতে পারেনি মানুষ। এ সপ্তাহে টানা ৩ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে ৪-৫ লাখ পর্যটক এসেছেন বলে জানায় ব্যবসায়ীরা।তবে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দূর পথ পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকেরা হয়রানির মুখে পড়লে কক্সবাজার বিমুখ হতে পারেন।

তথ্যঃ ইন্ডিপেনডেন্ট

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে