ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে আজ ২৬ মার্চ ২০২৪ মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে সকাল ১১.৩০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

সভায় বিশ্বিবদ্যালয়ে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাসহ অফিসার্স এসোসিয়েশন, তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি, শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতি ও ৪র্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম ছিলো জনগণের প্রতি তাঁর অপরিসীম ভালোবাসা ও গভীর আস্থা। তেমনি বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বের প্রতি জনগণেরও ছিলো অকৃত্রিম আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা। শৈশব ও কৈশর থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী পরিলক্ষিত ও বিকশিত হয়। বঙ্গবন্ধু’র জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই একটি নতুন ইতিহাস, আর এই ইতিহাসই আমাদের মহান স্বাধীনতা অর্জনের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু জন্মগতভাবেই মহান ছিলেন। মানুষের মঙ্গল ও মুক্তির জন্য তিনি যা বিশ্বাস করতেন, তা তিনি বলতেন ও করতেন। এজন্য তিনি কখনও পরাজিত হন নি, সাহস নিয়ে সকল প্রতিকূলতা ও অপশক্তি মোকাবেলা করে সবসময় এগিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্বের উপর গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বস্তরের জনতা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো ও আত্মহুতি দিয়েছিলো।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আরও বলেন, দেশপ্রেম, নিষ্ঠা, সততার সাথে বলিষ্ঠ আন্দোলন, সংগ্রাম ও অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মহত্ব অর্জন করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধু’র নেতৃত্ব কালোত্তীর্ণ ও কালজয়ী এবং তিনি পৃথিবীর সকল নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের সম্পদ। স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনঃর্গঠনে ও দেশের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু’র দূরদর্শী বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে উপাচার্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য তিনি যে দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তা অনুসরণ করে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশকে এক অনন্য উ”চতায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু’র বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন, আদর্শ ও দর্শন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনিমার্ণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের ধারা আরও এগিয়ে নিতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি উপাচার্য আহবান জানান।

দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কেন্দ্রীয় ভবন ও আবাসিক হলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সন্তানদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এছাড়া, শহিদদের আত্মার মাগফেরাত/শান্তি কামনায় বা’দ জোহর মসজিদুল জামিয়ায় বিশেষ মোনাজাত এবং বিশ^বিদ্যালয় এলাকার অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। কার্জন হল ও টিএসসিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হয়। 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে