আজ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী । বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার পথিকৃত এই শিল্পীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা,ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ১৯১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর আঁকাআঁকির ওপর ব্যাপক উৎসাহ ছিলো। ১৯৩৮ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। এ বছরই তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে কলকাতা সরকারি আর্টস স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে ভর্তি হন। সে সময় থেকেই তিনি চিত্রকলায় মনোনিবেশ করেন। কলকাতায় পড়াকালে ব্যাপকহারে ছবি আঁকেন নানা বিষয়ে। এই কলেজ থেকেই ১৯৩৮ সালে ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিংয়ে ¯œাতক করেন। তখনই তিনি শিল্পী হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। এর পর ঢাকায় এসে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ ইন্সটিটিউট অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাপ্টস ’। পরে তিনি এই প্রতিষ্ঠানকে চারু ও কারুকলা কলেজে উন্নীত করেন। বর্তমানে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারু ও কারুকলা ইন্সটিটিউিট। ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত শিল্পী এই মহাবিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শিল্পী জয়নুল আবেদীন চিত্রকলায় অসাধারণ অবদানের জন্য শিল্পাচার্য উপাধি লাভ করেন। তার চিত্রকর্মই প্রথম বাংলাদেশের চিত্রকর্মকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরিচিতি ঘটায়। তার উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে দুর্ভিক্ষ চিত্রমালা, সংগ্রাম, সাঁওতাল রমনী, ঝড়, বিদ্রোহী, কাক, সাধারণ নারী । এ ছাড়া তাঁর আঁকা খ্যাতিমান চিত্রকর্ম ৬৫ ফুট দীর্ঘ ‘ নবান্ন । ’ এটি তিনি ১৯৭০ সালে গ্রামবাংলার উৎসব নিয়ে আঁকেন।

দেশ স্বাধীনের পর তিনি সরকারের সহযোগিতায় ১৯৭৫ সালে নারায়ণগঞ্জের সোনারাগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘লোকশিল্প জাদুঘর’ এবং একই বছর ময়মনসিংহে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ময়মনসিংহ জয়নুল সংগ্রহশালা’। শিল্পীর চিত্রকর্ম সংগ্রহ রয়েছে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে ৮০৭টি, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনে ৫০০ চিত্রকর্ম, শিল্পীর পরিবারের কাছে শতাধিক চিত্রকর্ম সংগ্রহ রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে শিল্পীর অসংখ্য চিত্রকর্ম সংগ্রহ রয়েছে।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ১৯৭৬ সালের ২৮ মে ইন্তেকাল করেন।

বিনোদন ডেস্ক,বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে