ডিজিটাল ব্যাংক। আমানত গ্রহণের পাশাপাশি দেয়া হবে ঋণ। করা যাবে লেনদেনও। তবে এই ব্যাংকিং ব্যবস্থায় থাকবে না কোনো শাখা-উপশাখা কিংবা এটিএম বুথ। সশরীরে সেবার বদলে লেনদেন হবে মোবাইল অ্যাপ, ভার্চুয়াল কার্ড, কিউআর কোড বা অন্য প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতিতে। দেশে প্রচলিত ধারার ৬১ ব্যাংক থাকার পরও নতুন করে দেয়া হবে ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন। যাতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। এরই মধ্যে আবেদন করেছে দেশি-বিদেশি ৫২ প্রতিষ্ঠান। আর্থিক লেনদেনের অভিজ্ঞতা আছে এমন প্রতিষ্ঠানকেই ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
ক্যাশলেস সমাজ গঠনে ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে মোতাবেক ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১২৫ কোটি টাকা। আর প্রতি উদ্যোক্তাকে যোগান দিতে হবে ৫০ লাখ টাকা করে। এরই মধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন করেছে দেশি-বিদেশি ৫২ প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আমরা এখন এই আবেদনগুলো যাচাই বাচাই করে আমাদের মার্কেট, অর্থনীতি এবং সবকিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। বর্তমানে ৬১টি ব্যাংকের বেশিরভাগেরই আছে অনলাইন সেবা। তারপরও নতুন ডিজিটাল ব্যাংকের প্রয়োজনীতা কতোটুকু? অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল কবীর বলেন, আমরা আছি, আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আস্তে আস্তে কিন্তু আমাদের সবাইকে এক সময় ডিজিটালে আসতে হবে। কারণ আপনারা জানেন ব্যাংকের ওপর জনগণের আস্থা তৈরির জন্য চায় দ্রুততম সেবা। সময়টা কম লাগবে হ্যাসল ফ্রি একটা ব্যাংক ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রধান প্রধান যে ব্যাংকগুলো আছে তারাও ডিজিটাল সেবা দেয়। কিন্তু তারা সেটা সম্পূরক সেবা হিসেবে দেয়। তারা মূলত বড়দের জন্য সেবা দেয়। বড় বড় যে ক্লায়েন্ট আছে তাদের জন্য সেবা দেয়। একেবারে সমাজের নিচের তলা যারা সেখানে কিন্তু তারা পৌঁছাতে পারছে না। পাহাড়সমান খেলাপি ঋণ, ঋণ কেলেঙ্কারি, অর্থ পাচারসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ প্রচলিত ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে। ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় এ ধরণের অনিয়ম কমে আসবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গর্ভনর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, এটার চ্যালেঞ্জ কম হবে। কারণ এখানে সাধারণ মানুষ, ছোট উদ্যোক্তা, মাঝারি উদ্যোক্তা তারা বেশি এর সঙ্গে যুক্ত হবে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে ছোটরা অনেক বেশি কমপ্লায়েন্ট। ছোটরা টাকা মেরে দেয় না, ছোটরা ঋণ খেলাপি হয় না। ইতোমধ্যে যেসব প্রাতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের অভিজ্ঞতা আছে, ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদনে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়ার পক্ষে তিনি।