ঈদুল আজহায় গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে পশু কোরবানি। সারা বছর দেশে দুই কোটির বেশি পশু জবাই হলেও ঈদুল আজহার তিন দিনে কোরবানি হয়ে থাকে এর অর্ধেকের বেশি। এই সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখের মধ্যে। জবাই হওয়া প্রাণীর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা প্রায় ৪৫ লাখ। খাসি, ছাগল, ভেড়া প্রায় ৭০ লাখ। আর ৫ লাখের মতো উট, দুম্বা কোরবানি হয়ে থাকে ঈদের এই তিন দিনে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, জবাইয়ের সময় প্রতিটি গরু, মহিষ থেকে ১৫-২০ লিটার রক্ত বের হয়। আর অপেক্ষাকৃত ছোট প্রাণী ছাগল, ভেড়া থেকে রক্ত পাওয়া যায় কমপক্ষে ৫ লিটার। সে হিসাব অনুযায়ী, ঈদের এই তিন দিনে পশু কোরবানি থেকে পাওয়া যাবে কমপক্ষে ১৪ কোটি লিটার তাজা রক্ত।

বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে প্রতি লিটার ১০০ টাকা ধরা হলেও এই বিপুল পরিমাণ পশু-রক্তের মূল্য হতে পারত প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা। ধর্মীয় দৃষ্টিতে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত পবিত্র হিসেবে দেখা হয়। প্রথমটি, মাংসের উপযোগ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও দ্বিতীয়টি, অতি মূল্যবান তাজা রক্ত এখনও দেশে উৎকট গন্ধ তৈরির তরল বর্জ্য হিসেবেই দেখা হয়। এর পেছনের কারণ হলো, পশুর রক্তের বাণিজ্যিক ব্যবহার জানা নেই। পশুর চামড়া নিয়ে খুদে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকলেও রক্ত সংগ্রহে কারও কোনো আগ্রহ নেই। রক্তের কোনো ধরনের বাণিজ্যিক ব্যবহার দেশে শুরু হয়নি।

চামড়াশিল্পের মতো পশুর রক্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতে গড়ে ওঠেনি কোনো শিল্পকারখানা। ফলে, শুরু হয়নি বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশুর রক্ত সংগ্রহের কাজ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে