লাগামহীন মূল্যস্ফীতি, ডলারের সংকট, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত পূরণসহ নানামুখী চাপে যখন অর্থনীতি, তখন আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৫তম বাজেট। বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়।

বাজেটে ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৭ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য থাকছে সাড়ে ৬ শতাংশ। আর অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। বড় এই ব্যয় সামাল দিতে সরকারের আয়ের লক্ষ্য ৫ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎসের উপরই বেশি নির্ভর করবে সরকার। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। বৈদেশিক উৎস (অনুদানসহ) থেকে আসবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা হতে সংগৃহীত হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা।

বাজেটের আয়-ব্যয়ের বিশাল ঘাটতি পূরণে প্রধান ভরসাস্থল হিসাবে ব্যাংক খাত বেছে নিয়েছে সরকার। ফলে এবারও ঘাটতি পূরণে ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। এর আগে জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৬০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে এবার বাজেটের আকার বাড়ছে ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আয় আসবে বলে ধরে নিচ্ছে সরকার। এ আয়ের মধ্যে এনবিআর নিয়ন্ত্রিত অংশ ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

ঘাটতি আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি। ঘাটতি পূরণ করা হবে দুইভাবে, বৈদেশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য থাকছে সাড়ে ৬ শতাংশ। আগামী অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হবে আগামী ২৬’শে জুন। এর আগে ২৫ জুন ২৩-২৪ অর্থবছরের অর্থবিল পাস করা হবে। বাজেট কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে