ডয়েচে ভেলের বাংলা বিভাগের বিরুদ্ধে অপসাংবাদিকতার অভিযোগে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ’বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ইন ইউরোপ’ ও ‘জার্মানি আওয়ামী লীগ’। সোমবার (২৪ এপ্রিল) জার্মানির বার্লিনে ডয়েচে ভেলের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে জার্মানিতে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা ছাড়াও ইউরোপের অন্যান্য দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরাও অংশ নেন।
বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ইন ইউরোপের পক্ষ থেকে বলা হয়, ডয়েচে ভেলের অনুষ্ঠানবিষয়ক কার্যপ্রণালিবিধিতে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, তাদের অনুষ্ঠানগুলো অবশ্যই জনগণের স্বাধীন মতামত তৈরিতে সহায়তা করবে এবং একতরফাভাবে কোনও দল বা রাজনৈতিক, ধর্মীয় সম্প্রদায়, পেশাজীবী বা বিশেষ কোনও সম্প্রদায়কে সমর্থন করবে না বা উসকে দেবে না। কিন্তু বাংলাদেশের এলিট ফোর্সেস র্যাবের বিরুদ্ধে প্রচারিত তথ্যচিত্রটিতে অনেক বিতর্কিত, ভুল ও সাংঘর্ষিক তথ্য রয়েছে, যা ডয়চে ভেলের মূলনীতি বিরোধী বলে আমরা মনে করি।
সম্প্রতি ডয়চে ভেলে ইউটিউব, ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ইংরেজি ও বাংলায় ‘হাউ এলিট ফোর্সেস র্যাব টেরোরাইজ দ্য পিপল অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে। এই তথ্যচিত্রে অনেক বিতর্কিত বিষয়, ভুল তথ্য ও সাংঘর্ষিক বিষয় রয়েছে, যা ডয়চে ভেলের মূলনীতি বিরোধী বলে আমাদের নজরে এসেছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ’তথ্যচিত্র ও প্রতিবেদনটির শুরুতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলা হয়েছে, নানা হত্যা ও অপহরণের ঘটনা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে। তথ্যচিত্রটির শেষে বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে তাদের মতামত ও পরামর্শ রয়েছে। বিষয়গুলো স্পষ্টতই বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার এবং বিরোধী দলগুলোকে অযৌক্তিক ও অনৈতিক সমর্থন দেওয়ার উদ্দেশে করা হয়েছে, যা ডিডব্লিউর অনুষ্ঠানবিষয়ক মূলনীতি বিরোধী কাজ বলে আমরা মনে করি।’
এসময়, অবিলম্বে ডিডব্লিউ বাংলা বিভাগ বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। মানববন্ধনে, ‘বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ইন ইউরোপ’ ডয়েচে ভেলে ও নেত্র নিউজের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘ডেথ স্কোয়াড’: র্যাবের ভেতরের কথা – শিরোনামের তথ্যচিত্রকে ‘স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক অশুভ অভিপ্রায়ে প্রচারিত প্রতিবেদন’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে উক্ত প্রতিবেদনের ওপর একটি গবেষণাপত্র পেশ করা হয়।
জার্মানি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ’সম্প্রতি ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠানগুলোয় বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। জার্মানির জনগণের করের অর্থায়নে পরিচালিত এই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কিছু ব্যক্তি, তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ ও মতামত ডয়চে ভেলের মাধ্যমে প্রচার করছে। ডিডব্লিউ বাংলা বিভাগ ক্রমাগতভাবে অনেকগুলো নেতিবাচক প্রতিবেদন তৈরি করছে, যা বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবার অপপ্রয়াস বলে আমরা মনে করি।’
সমাবেশে জার্মানি আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক যে জার্মানির মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের প্রচারযন্ত্রের নিয়মবিধি না মেনেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। জার্মান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী ভূঁইয়া বলেন, জার্মানির মতো দেশ থেকে বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার বন্ধে আমাদের সবার সজাগ থাকতে হবে।