রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ’সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। কাদের বলেন, বিএনপিসহ অন্যান্য দল যদি রাজপথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া আন্দোলনের হুমকি দিয়ে লাভ নেই, রাজপথে ফয়সালা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কবরস্থানে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ছাড়াও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। একজন সাদাসিধা বাঙালি নারী ছিলেন শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তারপরও আদর্শে ও দৃঢ়তায় বলিষ্ঠ ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দিয়েছেন অনুপ্রেরণা, জুগিয়েছেন সাহস। এক হাতে সামলে নিয়েছেন পরিবার, জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আজ সেই মহিয়সী নারীর ৯২ তম জন্মবার্ষিকী।
বেগম মুজিবের ডাক নাম ছিলো রেণু। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম ফজিলাতুন নেছার। শিশুকালেই হারান বাবা-মাকে। কিশোরী বয়সে বিয়ে হয় শেখ মুজিবের সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু যখন ছাত্র সংগঠনে সক্রিয়, ছায়াসঙ্গী হিসেবে প্রতিটি কাজে সাহস যুগিয়েছেন রেনু। রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত শেখ মুজিবকে সাংসারিক জীবনে কাছে পেয়েছেন খুব কম। তবে এ নিয়ে কখনো আফসোস করেননি বঙ্গমাতা। জেলখানায় সাক্ষাতের সময় বঙ্গবন্ধুকে আন্দোলনের সব ঘটনা জানাতেন। নিয়ে আসতেন নির্দেশনা। গেরিলা কায়দায় বঙ্গমাতা তা পৌঁছে দিতেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ স্বাধীনতাকামী নেতৃত্বকে।
বঙ্গবন্ধুর যখন প্যারোলে মুক্তির সুযোগ হয় তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাধা দেন বঙ্গমাতা। ৬ দফা আন্দোলন ও সাতই মার্চের ভাষণের আগেও এমন অবস্থা তৈরি হয়েছিল। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট ঘাতকদের বুলেটের সামনেও প্রতিরোধ গড়েন বঙ্গমাতা। সংকটে সংগ্রামে নির্ভিক সহযাত্রী, সুখ দুঃখের আজীবন সঙ্গী মৃত্যুকালেও বঙ্গবন্ধুর সহযাত্রী হয়েই রইলেন।