অমর একুশের গ্রন্থমেলায় সতের দিনে আড়াই হাজারেরও বেশি নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে কবিতার বই শীর্ষে রয়েছে। এর পরই রয়েছে উপন্যাস। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ছোটগল্পের বই। মেলায় আজ বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে এই তথ্য জানান হয়।
আলোকচিত্রীঃ সাদমান রহমান সৌমিক
সপ্তদশ দিবসে আজ নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে ২২১টি। এ নিয়ে এবারের মেলায় মোট ২ হাজার ৫ শত ৭১টি নতুন বই প্রকাশিত হলো। প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কবিতার বই ৭৩৯টি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উপন্যাস ৪২৮, গল্পগ্রন্থ ৩০৪টি, শিশুতোষ ২৪৫, গবেষণা ৬১, ছড়ার বই ৫৪, ভ্রমণ ৫৭, সায়েন্স ফিকশন ৩৭, অভিধান ৮, অন্যান্য বিষয়ে এসেছে ২৩১টি নতুন বই।
আলোকচিত্রীঃ সাদমান রহমান সৌমিক
ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় আজ প্রচন্ড ভীড় ছিল। সকাল থেকে দুপুর দুটা পর্যন্ত ছিলো শিশুপ্রহর। শত শত শিশু-কিশোররা এসেছিল স্বজনদের সাথে। শিশুরাও প্রচুর বই কিনেছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা দলবেধে মেলায় এসেছে। তাদের ঘুরে ঘুরে বই কিনতে দেখা যায়। বিভিন্ন স্টল থেকে জানান হয়, গতকাল এবং আজ এ দুদিনে বই বিক্রি শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। স্টলে স্টলে আজ ক্রেতার ভীড় ছিল লক্ষ্যণীয়। বই পছন্দ করা আর কেনায় মানুষের এতো ভিড় ছিলো যে, বিক্রেতারা ছিল সদা ব্যস্ত। মেলা থেকে যারা বাড়ি ফিরে যাচ্ছে ,তাদের অনেকের হাতে হাতে বই দেখা গেছে। বিকেল চারটার পর থেকে মেলায় লাইন দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে হয়েছে।
আলোকচিত্রীঃ সাদমান রহমান সৌমিক
নতুন বই প্রকাশের বিষয়ে ভাষাসৈনিক,শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মেলায় আজ বাসসকে জানান,প্রতিবছরই কবিতার বই সবচেয়ে বেশি প্রকাশ পায়। কথাসাহিত্যের বইও এবারের মেলায় প্রুচর এসেছে। আর কবিতার বই প্রতিবছরই নতুন লেখকদের প্রকাশ পায়। এ জন্যে সংখ্যটা বেশি। গল্পের বইয়ের সংখ্যাটা বড়ই সন্তোষজনক। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনের জেলার ইতিহাসও এবার প্রকাশ পেয়েছে। যা খুবই সুখকর। জেলায় জেলায় ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। ওইসব ইতিহাস প্রকাশ শুরু হয়েছে,যা আমরা দীর্ঘদিন ধরে আশা করছিলাম।
আলোকচিত্রীঃ সাদমান রহমান সৌমিক
আজ প্রকাশিত নতুন বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, শওকত আলীর ‘শুধু কাহিনী’, নির্মলেন্দু গুণের ‘নির্বাচিত
৫০ কবিতা’, নূহ উল আলম লেনিন’এর ‘সময়ের কথকতা’, ইমদাদুল হক মিলনের ‘সমস্ত বড় গল্প’ বইগুলো ইন্তামিন প্রকাশনীর স্টলে এসেছে। বটেশ্বর বর্নন প্রকাশ করেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ‘পায়ে উর্বর পলি’, রোদেলায় এসেছে আল রেজার ‘শরৎ সাহিত্যে মানবতাবাদ’, মোর্শেদ শফিউল হাসানের ‘স্বাধীনতার পটভূমি; ষাট দশক’, য়ারোয়া বুক কর্নারে শহীদুল্লাহ ফরায়জী’র ‘চন্দ্র সূর্য যত বড় দুঃখ তার সমান’ বাংলা একাডেমির স্টলে সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদের ‘সন্তোষ গুপ্ত’, সুজন বড়ুয়ার ‘বাড়ির সঙ্গে আড়ি’, ধ্রুব এষ’ এর ‘আত্মকথন’, রাজিব আহমেদের ‘বিক্রয় অভিধান’, খালেদ বিন জয়েনউদ্দিনের ‘ঘুম পাড়ানি মাসিপিসি’।
আজ বিকেলে মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষনে বাংলা একাডেমির সভাপতি ও ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ভাষাসৈনিকরা হচ্ছে এ জাতির ইতিহাসে কীর্তিমান সন্তান। তাদেরকে নিয়ে একাডেমি এবারের মেলায় ষোলদিনব্যাপী আলোচনা সভার আয়োজন করে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলো। নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষাসৈনিকদের পরিচয় করার জন্যে এই আয়োজন বিশেষভাবে কাজ করবে।
এতে ‘একেএম আহসান, খান শামসুর রহমান ও মুজিবুল হক’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কবি ও বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মনজুরে মওলা। আলোচনায় অংশ নেন এম মোকাম্মেল হক ও আবদুল মমিন চৌধুরী। সন্ধ্যায় ছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইম্স নিউজ