মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি বঙ্গবীর জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর ১০৪তম জন্মদিন আজ। ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাবা খান বাহাদুর মফিজুর রহমানের কর্মস্থল সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন বঙ্গবীর এমএজি ওসমানীর জন্মবার্ষিকী পালনে সীমিত পরিসরে কর্মসূচি নিয়েছে। কর্মসূচিতে রয়েছে আজ সিলেট শহরের হজরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ওসমানীর কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ প্রভৃতি।
জেনারেল ওসমানী যৌবনে ব্রিটিশ আর্মিতে যোগ দেন। সেখানে তিনি ছিলেন বাঙালিদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ মেজর। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে থাকাকালে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সেনানিবাসের প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন কর্নেল হিসেবে।
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হন ওসমানী। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রধান হিসেবে অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তাকে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সের জেনারেল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭২ সালে দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেন তিনি। ১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনেও নির্বাচিত হন তিনি। তবে পরের বছর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। পরে বাকশাল গঠনের প্রতিবাদে ১৯৭৫ সালে সংসদ সদস্য পদ ও আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ১৯৭৫ সালের ২৯ আগস্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পান ওসমানী। তবে ৩ নভেম্বর জেলহত্যার ঘটনার পর ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ সালে জাতীয় জনতা পার্টি নামে নিজেই একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন।
এমএজি ওসমানী ১৯৭৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সম্মিলিত বিরোধী দলের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে ১৯৮১ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই কৃতী পুরুষের জীবনাবসান ঘটে।