বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬’হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ ইউক্রেন। দেশটিতে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয় এক বছর আগে। এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখার পরও, প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের মধ্যবিত্তের ভাতের থালা থেকে ক্ষুদ্র বা বৃহৎ ব্যবসায়। ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি।
ইউক্রেন ইস্যুতে দেশে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ বলছেন, ‘আমরা যুদ্ধের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না, তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যে দাম বাড়ার পর জানতে পেরেছি রাশিয়া আর ইউক্রেনের যুদ্ধের কথা। যুদ্ধ লাগলে ক্ষতি, তাই অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত। গেল বছর ফেব্রুয়ারিতেও এই মানুষগুলোর কাছে হয়তো এতটা পরিচিত ছিল না ৫ হাজার ৮শ’ কিলোমিটার দূরের দেশ ইউক্রেন। জীবন সংগ্রামে ব্যস্ত এই মানুষেরা অনেকেই হয়তো খোজ রাখতেন না সাবেক সোভিয়েত এই রাষ্ট্রটির। তবে গেল এক বছরে ভূখণ্ডটিতে রুশ আগ্রাসনের প্রভাবে যে অভাবের রূপ দেখেছে বাংলাদেশিরা তা ইউক্রেনকে চিনিয়েছে হাড়ে-হাড়ে।
রাজনীতি থেকে সমাজ, পররাষ্ট্র থেকে অর্থ, গেলো ১ বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে অনেক। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিশ্বের বাজারে যেহেতু ঊর্ধ্বগতি আপনারা অ্যাডজাস্ট করছেন, ভবিষ্যতে সমস্যা কমে গেলে আপনার ফের অ্যাডজাস্ট করবেন। হঠাৎ করেই বেড়ে যায় জ্বালানি তেলের দাম। গ্যাস- বিদ্যুতের দামও সমন্বয় হয়েছে একাধিকবার। স্বর্ণ থেকে ভোজ্য তেল কিংবা খাদ্যশস্য। সবকিছুরই এখন বাড়তি দর।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের মতে, দেশ দুটির সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য তেমন একটা না থাকলেও বিশ্বায়নের ধাক্কায় প্রভাব পড়ে সবখানেই। তিনি বলেন, আমার এখন বিশ্বয়ানের যুগে বসবাস করি। ব্রাজিলেও যদি একটা ঢিল পড়ে সেটার একটা সুনামি এফেক্ট চলে আসে আমাদের দেশে। যখন গমের দাম বাড়ে তখন চালের দামও বাড়বে। যখন সূর্যমুখী তেল না আসবে তখন স্বাভাবিকভাবেই সয়াবিনের তেলর দাম বেড়ে যাবে এবং আমাদের সেটি প্রদান করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে বিশ্ব রাজনীতির সাম্প্রতিক হালচালে সহসাই যে ফিরছে না স্বস্তি, এমন আশঙ্কা থেকেই যায়।