বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে সমালোচনার মুখে ওয়েবিল প্রথা বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। ঢাকা ও এর আশপাশের শহরতলির বাসে রাস্তায় কোনো চেকার থাকবে না। গত সোমবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকার রাস্তায় কোনো স্টপেজ থেকে একটি বাস কখন ছাড়ল, বাসে কতজন যাত্রী ছিল ইত্যাদির হিসাব রাখতে অনেক গণপরিবহনে ওয়েবিল ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনার মধ্যে সেই ওয়েবিল প্রথা বাতিল করা হয়েছে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি জানিয়েছে, ঢাকা শহর ও শহরতলী রুটে চলাচলকারী গাড়ির ওয়েবিলে কোনো স্ল্যাব থাকবে না। রাস্তায় কোনো চেকার থাকবে না। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজ পর্যন্ত গাড়ির দরজা বন্ধ থাকবে, খোলা রাখা যাবে না। রুট পারমিটের স্টপেজ অনুযায়ী গাড়ি থামাতে হবে। বুধবার থেকেই এটি কার্যকর বলে সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে জানানো হলেও রাজধানীতে এর প্রভাব দেখা যায়নি। একই সঙ্গে আরো জানানো হয়েছে, বিআরটিএর চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায় করতে হবে। চার্টের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। প্রতিটি গাড়িতে দৃশ্যমান স্থানে ভাড়ার চার্ট অবশ্যই টানিয়ে রাখতে হবে। ওয়েবিল প্রথায় একজন যাত্রীকে বাসে উঠে পরের স্টপেজে নেমে গেলেও পরবর্তী ওয়েবিল লেখার স্থান পর্যন্ত ভাড়া দিতে হতো। এতে করে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছিল। এভাবেই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বাড়তি ভাড়া আদায় করে আসছিলেন পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা। এ ছাড়া সিটিং সার্ভিস, গেটলক সার্ভিসের নামেও বাড়তি ভাড়া আদায় হয়ে আসছিল।
সড়ক পরিবহন আইন অনুসারে, ওয়েবিল প্রথা, সিটিং সার্ভিস, গেটলক সার্ভিস অবৈধ। বাড়তি ভাড়া আদায়ের দায়ে সংশ্লিষ্ট পরিবহন কোম্পানির চলাচলের অনুমতি বাতিল করার বিধান আছে। কিন্তু সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় আইনের এই কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োগ করেনি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে কিছু জরিমানা আরোপ করে। এবারো ঢাকায় ৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব আদালতের সঙ্গে পরিবহনমালিকদের একটি করে দল থাকবে বলে জানিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। কোনো পরিবহনের গাড়িতে বিআরটিএর পুনঃনির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় না করা হয়, সেজন্য পরিবহন মালিকদের এই টিম ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহায়তা করবে। এসব টিম বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে থেকে সব অনিয়ম তদারকিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। এর আগে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাসমালিকদের দাবির মুখে বাসভাড়া বাড়ায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ৭ আগস্ট থেকে নতুন এ ভাড়া কার্যকর হয়।