জহির সিকদার,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।। যে মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলায় মেতে উঠবার কথা, সেখানে জন্ম নেয় মশা। সামান্য বৃষ্টি হলেই স্কুলের মাঠে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এমনই চিত্র দেখা যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের কলেজ পাড়ায় বাংলাদেশ সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে। দীর্ঘদিন যাবৎ জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে না অসংখ্য শিক্ষার্থী।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এর ভয়াবহ পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশের রাস্তা থেকে স্কুল মাঠটি নীচু। সেই সঙ্গে পাশের পুকুর গুলোতে পানি যাওয়ার পাইপ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনও স্বাভাবিক ব্যবস্থা নেই। স্কুলটির মাঠে থৈ থৈ পানি, আগাছায় ভরে গিয়ে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। মাঠের অল্প কিছু অংশে পানি কম থাকলেও তা স্যাতস্যাতে। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে মাঠে সময় দিতে পারছে না। দীর্ঘদিন যাবত খেলার এ মাঠটি খেলাধুলার জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারেনী। জলাবদ্ধতার কারণে শ্রেণিকক্ষে যাতায়াতের সময় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনেকেই পা পিছলে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে। একই কারণে কারণে স্কুল খোলা থাকা সত্বেও কমছে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহল এমন পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে স্কুল মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর দাবি জানান।
স্থানীয়রা জানায়, মাঠটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করা এবং পাশের পুকুরে পানি নিস্কাশনের জন্য দুটি পাইপ দেওয়া থাকলেও সে পাইপগুলি পুকুরের ইজারাদার বন্ধ করে দেওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সে সময় শিশু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তব ভিত্তিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী শিমু আক্তার বাংলাদেশ বুলেটিন কে বলেন, আমরা টিফিনের সময়গুলো মাঠে বসে কাটাতাম। কিন্তু এখন জলাবদ্ধতার কারণে মাঠের আশেপাশে চলাফেরা করা যাচ্ছে না।
আরেক শিক্ষার্থী সাইমা রহমান জানান, জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। দীর্ঘদিন যাবৎ জলাবদ্ধতা থাকলেও তা নিরসনে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। সমস্যার কথা বলতে গিয়ে শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠে পানি আটকে থাকে তাই আমরা খেলাধুলা করতে পারিনা। আমরা মাঠে হাঁটাহাঁটি করতে পারিনা। স্কুলে এসে সবসময় শ্রেণিকক্ষে সময় কাটাতে হয়। এতে করে অনেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আওয়াল জানান, বৃষ্টি আসলেই আশপাশের মহল্লার পানি মাঠে নেমে আসে। এর ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে সমস্যা হয়। শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুম ছেড়ে মাঠে যেতে পারে না। আমি যথাযত কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো যাতে করে এই জলাবদ্ধতার সমস্যাটির সমাধান করা যায়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার মো. শওকত আকবর খান বাংলাদেশ বুলেটিন কে বলেন, অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এই বিদ্যালয়ে আমাদের পাঠদানের অনুমতি নাই, সেজন্য আমি ওই বিদ্যালয়ে ভিজিটে যায়নি। তবু যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিষয়টি আমাদের দেখা উচিৎ। আর জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমি আজকেই আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অত্র্য বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের সাথে আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ