রুশ বিপ্লবের শততম বার্ষিকী আজ, রুশ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয়। ১৯১৭ সালের এই দিনে রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা হয় দেশটিতে। যা প্রভাবিত করে গোটা বিশ্বকে। বিশ্বজুড়ে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে এ ঐতিহাসিক ঘটনার শতবর্ষপূর্তি। সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে, জারতন্ত্র উচ্ছেদ করে ক্ষমতায় আসে কমিউনিস্ট বলশেভিকরা। নেতৃত্বে ছিলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন। বিপ্লবের লক্ষ্য, পুঁজিবাদকে প্রতিহত করে এক মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলা।
জারের শাসনামলে রাশিয়া ছিল এক পিছিয়ে থাকা দেশ। বলা হতো ইউরোপের পশ্চাদভূমি। বিপ্লবের পর বদলে যেতে থাকে দেশটি। কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা সবকিছুতে নিশ্চিত করা হয় মানুষের অধিকার। গড়ে তোলা হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।শিগগিরই প্রতিবপ্লিবী আক্রমনের মুখে পড়ে ইউনিয়ন। সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদীরা চেষ্টা অব্যহত থাকে এই সোভিয়েত ভেঙে ফেলার। আরও বড় আঘাত আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। তিন কোটি মানুষের প্রাণের বিনিময়ে হিটলারের আক্রমন প্রতিহত করে দেশটি।
শত বাধা ও প্রতিকুলতার মধ্যেও মাত্র দুই দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অর্থনীতি শক্তিশালী ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। এক দশকের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করা হয়। কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য আসে। গড়ে উঠতে শুরু করে নতুন নতুন শিল্প। ১৯২৯-৩৩ সালের মহামন্দায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত পুঁজিবাদী দেশ আক্রান্ত হলেও, স্পর্শ করেনি সোভিয়েত ইউনিয়নকে।সোভিয়েত বিপ্লবের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী সমাজতন্ত্রের আন্দোলন জোরদার ও বিস্তৃত হয়। একই সঙ্গে ঔপনিবেশিক দেশগুলোতে তীব্র হয় জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম। বেগবান হয় সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই। এশিয়া, আফ্রিকার শতাধিক দেশ অর্জন করে রাজনৈতিক স্বাধীনতা। পৃথিবী বিভক্ত হয় পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র এ দুই শিবিরে।
নব্বই দশকে নানা ঘটনার ধারাবাহিকতায় ভেঙে যায় সোভিয়েত ইউনিয়ন। ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে এখনো আসছে নানা তত্ত্ব। তবে মানবিক বিশ্বের স্বপ্ন প্রতিষ্ঠায় রুশ বিপ্লব ইতিহাসের আলোকবর্তিকা হয়ে পথ দেখাবে চিরকাল।
অনলাইন ডেস্ক, বিডি টাইমস্ নিউজ