ঢাকা, মঙ্গলবারঃ রাজধানীতে শুরু হল তিনদিনব্যাপী ‘এবিইউ রেডিও এশিয়া কনফারেন্স এন্ড রেডিও সং ফেস্টিভ্যাল’। আজ ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সম্মেলন ও উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এশিয়া প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (এবিইউ) আয়োজিত এ উৎসবের যৌথ আয়োজক বাংলাদেশ বেতার। বাংলাদেশ টেলিভিশন এই উৎসব আয়োজনে সহযোগিতা করছে। রেডিও এশিয়া কনফারেন্স এন্ড রেডিও সং ফেস্টিভ্যালের আসর বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘রেডিও অল এরাউন্ড আস: মোর দ্যান জাস্ট আ মিডিয়াম’।
তথ্য সচিব আবদুল মালেক এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মুরাদ হাসান এবং এবিইউ’র সেক্রেটারি জেনারেল জাভেদ মোত্তাগি। বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু জাতির প্রতিষ্ঠাতা তাঁর সব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে ও তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করা হয়।বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ এখন বিস্ময়কর উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে।ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর কোন স্বপ্ন নয়, এটা এখন বাস্তবতা।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, `আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমাদের সামাজিক, মানবিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ রক্ষায় রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।বর্তমান সরকার দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে, এক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বেতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।’১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রেডিওর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধকালে মুক্তিকামী বাঙালির রেডিও সম্প্রচার কেন্দ্র ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। এই বেতার কেন্দ্র স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচার করার পাশাপাশি দেশের মাটিতে যুদ্ধে অংশ নিতে জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রযাত্রার ওপর আলেকপাত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনবহুল এবং জনপ্রতি সবচেয়ে কম চাষযোগ্য জমির দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, খাদ্যশস্য রপ্তানিকারী দেশ।২০০৯ সালের আগে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৬শ’ মার্কিন ডলার, বর্তমানে তা ২ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি।আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৬, যা বিশ্বের অন্যতম সর্বেোচ্চ। বিশেষ অতিথি তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এবিইউ রেডিও এশিয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা এমন একটি দেশকে দেখতে পাবেন যে দেশ আজ ডিজিটাল রূপান্তরের সকল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে একটি মাল্টিমিডিয়া ও মাল্টিপ্ল্যাটফর্ম সমৃদ্ধ তথ্য জগত বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রযাত্রার ওপর আলেকপাত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনবহুল এবং জনপ্রতি সবচেয়ে কম চাষযোগ্য জমির দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ খাদ্যে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, খাদ্যশস্য রপ্তানিকারী দেশ।২০০৯ সালের আগে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৬শ’ মার্কিন ডলার, বর্তমানে তা ২ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি।আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.১৬, যা বিশ্বের অন্যতম সর্বেোচ্চ। বিশেষ অতিথি তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এবিইউ রেডিও এশিয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা এমন একটি দেশকে দেখতে পাবেন যে দেশ আজ ডিজিটাল রূপান্তরের সকল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে একটি মাল্টিমিডিয়া ও মাল্টিপ্ল্যাটফর্ম সমৃদ্ধ তথ্য জগত বিনির্মাণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
সভাপতির বক্তৃতায় তথ্যসচিব বলেন, বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গণমাধ্যম হিসেবে বেতার উল্লেখযোগ্য বূমিকা পালন করছে। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে গণমানুষের বন্ধু বাংলাদেশ বেতার সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।সম্মেলনে বাংলাদেশসহ কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউলিজ্যান্ড, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, পর্তুগাল, মিশর, রোমানিয়া, তুর্কেমিনেস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, নেপালসহ ২২ টি দেশের ২১২ জন রেডিও এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অংশ নিচ্ছেন। ৬২ জন বিদেশি প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন। সম্মেলনস্থলে রয়েছে প্রাচীন রেডিও সেট, কমিউনিটি রেডিও কার্যক্রম ও বাংলাদেশ বেতারের গৌরবময় ইতিহাসের প্রদর্শনী নিয়ে স্টল ।
এই অঞ্চলসহ বিশ্বের রেডিও বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ এই সম্মেলনে তাঁদের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা এবং তত্ত্ব পরস্পরের সাথে ভাগ করছেন।নতুন সহস্রাব্দের তৃতীয় দশকের দ্বারপ্রান্তে এসে এই গণমাধ্যমকে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, রেডিও এশিয়া সম্মেলন সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে। সম্মেলনেরর প্রথম দিন সকালে শতাব্দী প্রাচীন এই সম্প্রচার মাধ্যমের বিবর্তন ও ভবিষৎ নিয়ে এক্সপার্ট প্যানেল অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়া, ইরান এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও রেডিও প্রতিনিধিরা এতে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও ভাবনা উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশ বেতারের গৌরবময় ইতিহাস ও এদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তার অবদান নিয়ে একটি অধিবেশন ছাড়াও এদিন রোমানিয়া, ইন্দোনেশিয়া ভারত ও নেপাল তাদের রেডিও সম্প্রচার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।বিশ্বব্যাপী ভুল তথ্য এবং তথ্য বিকৃতির চ্যালেঞ্জ ও তার প্রতিকার নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে মিডিয়া লিটারেসি মাস্টারক্লাস অধিবেশনটি ছিলো বিকেলে ।
১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের বর্তমান সদস্য ৭৬টি দেশের ২৭২টি ব্রডকাস্টিং সংস্থা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই সংগঠন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন মধ্য দিয়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলসহ সারা বিশ্বের সম্প্রচার মাধ্যমের বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘রেডিও সং ফেস্টিভ্যাল’ এর মধ্য দিয়ে এই সম্মেলনের সমাপ্তি হবে।
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ