প্রত্যেক মানুষের বিবেক এবং মর্যাদাবোধের কাছে গেরিলা সংগঠনের এক অবিরাম আহ্বান রয়েছে । চে জানতেন বিপ্লবীদের সূক্ষ্ম বোধশক্তি কিভাবে স্পর্শ করা যায় । মারকোসকে যখন চে বারবার তিরস্কার করছিলেন, বাহিনী থেকে তাকে অসম্মানের সাথে তাড়িয়ে দেবেন বলে সাবধান করে দিচ্ছিলেন, তখন সে তাকে বলেছিল, “তার আগে যেন আমাকে গুলি করা হয় !” পরবর্তীকালে এই মারকোস বীরের মত জীবনদান করেছিলেন । সংগ্রামের সময় যাদের তিনি বিশ্বাস করেছেন এবং যাদের তিনি কোন না কোন কারনে তিরস্কার প্রতেকের মনোভাব একই রকমের ছিল । সংগ্রামের সময় যাদের তিনি বিশ্বাস করেছেন এবং যাদের তিনি কোন না কোন কারনে তিরস্কার করেছেন প্রতেকের মনোভাব একই রকমের ছিল । তিনি ছিলেন ভ্রাতৃপ্রতিম এবং সহৃদয় নেতা । তিনি জানতেন কি করে কাজ আদায় করতে হয় এবং কখন কঠোর হতে হয় । তার চেয়েও বড় কথা অন্যদের প্রতি ব্যবহারের তুলনায় তিনি নিজের প্রতি বেশি কঠোর ছিলেন । গেরিলাদের শৃঙ্খলা গড়ে তোলার ব্যাপারে চে নিরভর করেছিলেন নৈতিক চেতনার উপর , আর প্রেরনামুলক দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেছিলেন নিজেকে ।

ডায়েরীতে দেব্রে সম্পর্কে অনেকবার উল্লেখ রয়েছে । এ থেকে বোঝা যায় এই বিপ্লবী লেখকের গ্রেপ্তার ও কারাদণ্ডে চে কতবেশি চঞ্চল হয়ে উঠেছিলেন । দেব্রেকে তিনি ইউরোপে কোনো কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন । যদিও প্রকৃতপক্ষে তাকে গেরিলা বাহিনীতে রাখার ইচ্ছাই তার ছিল । এজন্য তার ব্যবহার সম্পর্কে তিনি কিছু অসম্মতি ো সময় সময় সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ।
দেব্রে যখন অত্যাচারী শক্তির কবলে পড়েছিলেন তখন তাকে কী দুর্বিষহ দিন কাটাতে হয়েছে, টা চে-র পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। বন্দীকারী নিপীড়কদের সামনে সে কিভাবে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে সাহসের পরিচয় দিয়েছে তাও তিনি জানতেন না । তিনি অবশ্য বিচারের উপর বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন । তার মৃত্যুর ছয়দিন পূর্বে, ৩রা অক্টোবর চাপা উত্তেজনা ও তিক্ত ঘটনাবলীর মধ্যেও তিনি বলেছিলেন;”দেব্রের সঙ্গে এক সাক্ষাতকারের কথা শোনা গেল। এক প্ররোচক ছাত্রের সামনে সে খুবই সাহসের পরিচয় দিয়েছে ।“ লেখকের সম্পর্কে এই তার শেষ উল্লেখ ।

(চে গুয়েভারার ডায়েরী থেকে… চলবে )

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে