জুলাই গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিদেশে পলাতকদের ফিরিয়ে আনতে নিয়ম অনুসারে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। গতকাল রোববার ধানমন্ডিতে ট্রাইব্যুনালের কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বিচারক নিয়োগ হওয়া মাত্র ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল হবে। ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল হওয়া মাত্র আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আসামিদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা, তথ্য-উপাত্ত জব্দ করার জন্য আদেশ চাইব। আসামিদের দ্রত গ্রেপ্তারে আইনশৃংখলা বাহিনীর সাহায্য লাগবে। সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল থেকে আদেশ আসবে। আদেশ কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

শেখ হাসিনাসহ পলাতকদের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, যাদের কারণে এই ঘটনা সংঘঠিত হয়েছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছিল, টপ কমান্ডাররা যারা তাদের বিষয়ে অগ্রাধিকার নিয়ে আসছি। বাংলাদেশের কোনো অপরাধী বাইরে থাকলে ইন্টারপোলের সঙ্গে যে এগ্রিমেন্ট, সেটার কারণে রেড নোটিশ পাঠাতে পারে। সেই রেড নোটিশ পাঠানোর মাধ্যমে অনেককে ফেরত আনতে পারব।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিমে নিয়োগ হলেও বাকি রয়েছে বিচারক নিয়োগ। বিচারক নিয়োগ নিয়ে গত ১০ অক্টোবর আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানান, সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যে। নির্দিষ্ট করতে পারছি না। সামনে কয়েকদিন বন্ধ আছে। বন্ধ না থাকলে বলতাম তিন চার দিনের মধ্যে। খোলার পরে তিন চার দিনের মধ্যে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

পলাতকদের বিষয়ে আসিফ নজরুল জানান, আমরা বিচার করব, এখানে কে উপস্থিত কে অনুপস্থিত, এটা আমাদের দেখার বিষয় না। কারণ আমাদের আইনের মধ্যে অনুপস্থিত ব্যক্তির বিচার করার বিধান রয়েছে। আইনে অনুপস্থিত ব্যক্তিরা যেসব দেশে গেছেন, তাদের সাথে আমাদের যদি প্রত্যপর্ণ চুক্তি থাকে, তাহলে তাকে আমরা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যও আমরা লিখতে পারি। আমাদের সব অপশন খোলা আছে। বিচার করার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আশা করি, ফুল স্কেলে বিচার মাস খানেকের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। এমন পরিস্থিতিতেই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে