আবারও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন তাকসিম এ খান। মঙ্গলবার ( ১১ জুলাই ) ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ৩০৬তম বৈঠকে এ বিষয়ক প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওয়াসা ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সাতজন বোর্ড সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে তিনজন সদস্য পুনর্নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) জানান। তাদের আপত্তির বিষয়টি আমলে না নিয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে বোর্ড।
ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের মোট সদস্য ১৩। এর মধ্যে এমডি ও বোর্ড চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে সদস্য। পক্ষে মত দেওয়া সদস্যদের মধ্যে এমডি তাকসিম এ খান নিজে ও বোর্ড চেয়ারম্যান ড. সুজিত কুমার বালাও ছিলেন। আপত্তি দেয়া বোর্ড সদস্যরা হলেন– ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি একেএম আব্দুল হামিদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সহসভাপতি ইমরান আহমেদ ও ইনস্টিটিউব অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস বাংলাদেশের সহসভাপতি সাব্বির আহমেদ।
উপস্থিত অন্য দু’জন সদস্য হলেন– ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন রশিদ শুভ্র এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। বোর্ড সভার প্রস্তাবে সরকার অনুমোদন দিলে ২০২৬ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত এমডি থাকতে পারবেন তাকসিম এ খান। পাশাপাশি টানা ১৭ বছর ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে থাকার রেকর্ডও তৈরি হবে। এক বোর্ড সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা এমডি নিয়োগের নিয়ম জানতে চেয়েছিলাম। তারা কোনো নিয়ম দেখাতে চান না। তারা শুধু বর্তমান এমডির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পক্ষে কথা বলেন। তিনজন বোর্ড সদস্য এতে আপত্তি দিয়েছিলেন। তাদের আপত্তি আমলে নেয়া হয়নি।
তাকসিম এ খানের মেয়াদ ( চুক্তি অনুযায়ী ) আগামী ১৩’অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা। ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর তিনি প্রথম ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় তার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। টানা ১৪ বছর দায়িত্ব পালনের পর আবারও এমডি থাকার আগ্রহ দেখান তিনি। এ নিয়ে তাকসিম এ খানের সঙ্গে সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফার দূরত্ব দেখা দেয়। এমডির বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠিও দিয়েছিলেন গোলাম মোস্তফা। এর পর গত ২১ মে গোলাম মোস্তফাকেই অব্যাহতি দেয় মন্ত্রণালয়। গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এমডির মেয়াদ শেষের দিকে হওয়ায় আমি নিয়ম মতো পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমডি নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এটা তাকসিম সাহেব মেনে নিতে পারেননি। এ জন্যই তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিন বছরের জন্য প্রথম নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১২ সালের অক্টোবরে তাকসিম এ খানের মেয়াদ শেষ হয়। পরে মন্ত্রণালয় দুই দফা তার মেয়াদ বাড়ায়। ২০১৫ সালে ওয়াসা বোর্ড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে বর্তমান এমডিই আবার নিয়োগ পান। পরে আর কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে বোর্ডের মাধ্যমে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়।