গ্রীষ্মকাল শুরু হতেই বাজারে আসতে শুরু করেছে মৌসুমী সুস্বাদু ফল লিচু। ছোট থেকে বড় সবাই লিচুর পাগল। লিচুর রসে মুখ ভরাতে কে না ভালোবাসে। সবার পছন্দ হলেও লিচু খেতে গিয়ে সতর্ক থাকতে হয় এমন অনেকেই বলে থাকে। তাই চলুন বাজার থেকে লিচু কেনার আগে জেনে নিই লিচুর ভালো-মন্দ।
দেশের বাজারে দিনাজপুরের লিচু জুড়ি মেলা ভার, সকলের নজরে থাকে দিনাজপুরের লিচু। এ লিচুর চাহিদা দেশজোড়া। রসাল এই লিচুর বেশ খ্যাতি রয়েছে। নানা জাতের ও সুন্দর সুন্দর নামের লিচু পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম মাদ্রাজি ও বেদানা জাতের লিচু। ব্যবসায়ীরা জেলার বড় বড় বাজার থেকে এসব লিচু কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে থাকেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে দিনাজপুরের বাজারে চলে আসে মাদ্রাজি লিচু। এই লিচু আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট। বিচি বড়, শ্বাসের পরিমাণ কম। টক-মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে এটি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, দিনাজপুরের ৫ হাজার ৪৮১ হেক্টর জমিতে লিচুবাগান রয়েছে ৫ হাজার ৪১৮টি। এর মধ্যে বোম্বাই লিচু ৩ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে, মাদ্রাজি ১ হাজার ১৬৬ হেক্টর, চায়না থ্রি ৭০২ দশমিক ৫ হেক্টর, বেদানা ২৯৪ দশমিক ৫ হেক্টর, কাঁঠালি ২১ হেক্টর এবং মোজাফফরপুরী লিচু ১ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। আর বসতবাড়ির উঠানসহ বাগানগুলোতে লিচুগাছ রয়েছে সাত লক্ষাধিক। তবে দিনাজপুর সদর, বিরল, কাহারোল ও চিরিরন্দর উপজেলার লিচুর উৎপাদন বেশি হয়। বোম্বাই, মাদ্রাজি, বেদানা, কাঁঠালি ও চায়না-১, ২ ও ৩ জাতের লিচু এখানে আবাদ করা হয়। শাঁস বেশি এবং সুস্বাদু হওয়ায় বেদানা ও চায়না–৩ জাতের লিচুর দাম বেশি থাকে প্রতি বছরই।
মাদ্রাজি ও বেদানা লিচুর পরই ভালো চাহিদা রয়েছে বোম্বাই ও চায়না থ্রি লিচুর। তবে এদের ফলন কম হওয়ায় এসব জাতের লিচু বেশি দামে কিনতে হতে পারে ক্রেতাদের। তবে বাজার থেকে তাজা লিচু কিনে আনলেও দিন দুয়েকের মধ্যেই লাল লিচু বাদামি হয়ে যায়। বাজার থেকে সেরা লিচু কিনে আনাও সহজ কাজ নয়। তাজা লিচু চেনার কিছু উপায় আছে।
তাজা লিচু চেনার উপায়গুলো
যদি ধরে দেখেন লিচু খুব বেশি শক্ত লাগছে, তা হলে বুঝবেন সেই লিচু কাঁচা। কাঁচা লিচু খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে।
লিচুর গায়ে যদি ভেজা ভাব দেখতে পান, তা হলে বুঝবেন লিচুতে পচন ধরতে শুরু করেছে।
লিচুর বোঁটা যদি ফলের সঙ্গে শক্তভাবে লেগে থাকে, তাহলে বুঝবেন সেই লিচু যথেষ্ট তাজা।
লিচুর গায়ে যদি কালো ছোপ দেখেন, তাহলে সেই ফল কেনা ঠিক নয়। সাধারণত ফলনের সময়ে রাসায়নিক ব্যবহার করলে এমনটা হয়।
আবার টকটকে লাল লিচু দেখে অনেক ক্রেতা মনে করতে পারেন এটি ভালো মানের লিচু। এই লাল কেমিক্যাল ক্যান্সারেরও অন্যতম কারণ।
যেভাবে চিনবেন কেমিক্যাল দেয়া লিচু
চিকিৎসকরা বলছেন,বাজার থেকে লিচু কিনে আনার পর একঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। যদি দেখেন হাতে রং লাগছে বা লিচুর লাল রং ফ্যাকাশে হয়েছে তাহলে বুঝবেন সেই লিচু পাকা নয় এবং শরীরের জন্য তা ক্ষতিকর।আর যদি দেখেন পানিতে ভিজানোর পরও রং একইরকম আছে তাহলে তা নিঃশ্চিন্তায় খেতে পারেন। তবে গাঢ় লাল রঙের লিচু না কেনা ভাল।