জহির সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজত কর্মীদের তাণ্ডবে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে ষ্টেশন।
সেসময় দুর্বৃত্তরা স্টেশনে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টারের রুম, অপারেটিং রুম, ভিআইপি রুম, প্রধান বুকিং সহকারীর রুম, টিকিট কাউন্টার ও প্যানেল বোর্ডসহ সিগনালিং যন্ত্রপাতি, পয়েন্টের সিগন্যাল বক্সসহ লেভেল ক্রসিং গেট ও অন্যান্য স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিনষ্ট করে দিয়েছিল। ঘটনার পরের দিন থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে সব ধরনের আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। অবশেষে দীর্ঘ আট মাস পরে সব ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপন করার পর স্টেশনটি শনিবার ১৩ নভেম্বর পুনরায় চালু করা হলো।
ষ্টেশনটির সংস্কার কাজের পুনঃউদ্বোধন উপলক্ষে শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে এক সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। উক্ত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রআম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১৬ একবার স্টেশনটি ভাঙচুর করা হয়েছে। এদেরকে আমি মানুষ বলে মনে করিনা। সে দিন আমি বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছিলাম, কিন্তু হয় নাই। হামলার ঘটনার মামলাগুলোর সঠিক তদন্ত হয় নাই। তদন্ত হলে প্রকৃত অপরাধীরা বের হয়ে আসতো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্টেশনটি চালুর বিষয়ে নির্দেশনা না দিতেন তাহলে আরও সময় লাগতো। এসময় প্রধানমন্ত্রী ও রেলপথ মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলষ্টেশনে সব ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি,হামলা কারীদের প্রতি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করে মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ যারা করবে তাদের আর ছাড় দেওয়া হবেনা। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিন ভূঁইয়া, জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহানুর ইসলাম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভনসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এর আগে সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। গার্ড ব্রেকে ফ্ল্যাগ সিগন্যাল প্রদানের মাধ্যমে পুনরায় যাত্রা বিরতি চালু করেন। অপরদিকে দুপুর সোয়া ১টায় জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিকালে স্বাগত জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রআম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এর মধ্য দিয়ে পূর্বের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে যাত্রাবিরতি করা ১৪টি আন্তঃনগর, ৮টি মেইল এবং ৪টি কমিউটার ট্রেনে যাত্রা বিরতি করবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নিউজ।। বিডি টাইমস নিউজ