তেলের দাম কমিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি মিলবে না; বরং এতে পণ্যের দাম বাড়বে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। আর তেলের দাম কমায় ও গ্যাসের উৎপাদন খরচ সাশ্রয় হওয়ার পরও পণ্য দুটির দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বছর দুয়েক ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে। তবে ভর্তুকি দেওয়ার কথা বলে এতদিন দেশের বাজারে তেলের দাম কমানো হয়নি। এতে দায়-দেনা মিটিয়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
চলতি মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৮ টাকা কমানো হয়। কিন্তু এর পরই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হতে পারে বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ ধারাবাহিকতায় পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে প্রস্তাব জমা দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও চারটি বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান। যেখানে গড়ে প্রায় ৬ শতাংশ হারে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে ভ্যাট যোগ হলে এখন যে গ্রাহক ১০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল দেন, তাঁকে দিতে হবে প্রায় ১১০ টাকা।
আট মাস আগে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পর এখন আবার দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘এর আগেও যখন বাড়ানো হয়েছে, তখনো আমি কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাইনি; আমি এখনো পাচ্ছি না। এখন বরং আমি কম (যৌক্তিকতা) পাচ্ছি। কারণ হচ্ছে, আমাদের ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ তেলভিত্তিক। তেলের দাম অনেক কমে গেছে। এতে স্বাভাবিকভাবে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, তার দাম আগের মতো হবে না (আগে যে যুক্তিতে দাম বাড়ানো হয়েছে এখন তা চলবে না)। তা ছাড়া আমি মনে করি, আমাদের বেশ কিছু দক্ষ পাওয়ার প্ল্যান্ট হয়েছে। এ কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনেও কিছুটা সাশ্রয় হচ্ছে।’