চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর ম্যাকাও-এর চীনের অধীনে ফিরে আসার ২৫তম বার্ষিকী। বিগত ২৫ বছরে ম্যাকাও-এর অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, বাসিন্দাদের জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে, এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতিময় পরিবেশের লক্ষণীয় উন্নয়ন ঘটেছে। ম্যাকাও-এর আয়তন মাত্র ৩০ বর্গকিলোমিটার এবং এর জনসংখ্যা ৭ লাখের কম। স্বদেশে ফিরে আসার পর ম্যাকাও-এ সেবাসংস্থার সংখ্যা ১৭০০টি থেকে ১২ হাজারে উন্নীত হয়েছে।

ম্যাকাও-এর একটি সেবাসংস্থার প্রধান উ সিয়াও লি ১৯৯৮ সালে স্বামীর সঙ্গে ম্যাকাওয়ে আসেন। তাঁর দৃষ্টিতে স্বদেশে ফিরে আসার পর ম্যাকাও-এর সবচেয়ে পরিবর্তন হলো সামাজিক স্থিতিশীলতার উন্নয়ন। বয়স্কদের যত্ন, শিশুযত্ন, চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে জনগণের চাহিদা পূরণের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে ও করছে চীনের এই বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকার।

উ বলেন, “বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকার বেসরবারি সেবাসংস্থাসমূহের কাজে সমর্থন যোগায়। আমাদের এ সেবা সংস্থাসমূহে প্রবীণদের যত্ন, আবাসিক এলাকার পরিষেবা এবং সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রমের ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও, বহুমুখী অডিটোরিয়াম, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ডান্স স্টুডিও ও লাইব্রেরি আছে।”

চলতি বছরের প্রথমার্ধে ম্যাকাওয়ের সেবাসংস্থাসমূহ মোট ১৭.৮ লাখ পার্সনটাইস মানুষকে সেবা দিয়েছে। উ জানান, সংস্থাসমূহের সমিতির প্রায় ৭০ শতাংশ তহবিল বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকার সরবরাহ করে থাকে। বাকি তহবিল ফাউন্ডেশন ও সামাজিক অনুদান থেকে আসে। সেজন্য বয়স্কদের যত্ন পরিষেবা গ্রহণকারীদের খুব কম ফি দিতে হয়। ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের প্রসাশক প্রতিবছর নীতি বক্তৃতার আগে বাসিন্দাদের দাবিগুলো মনোযোগ সহকারে শোনেন। উ আরও বলেন, “বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকার সম্পূর্ণভাবে বাসিন্দাদের বাস্তব চাহিদা বিবেচনা করে এবং বয়স্কদের জন্য বুদ্ধিমান যত্ন, বুদ্ধিমান আসবাবপত্র, এবং বাধামুক্ত সুবিধার ব্যবস্থা করে।”

উ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আবাসিক এলাকায় পরিষেবাগুলোতে উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি সংযুক্ত করা এবং পরিষেবা পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য চেষ্টা চালানো হয়। ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকারের সামাজিক কাজকর্ম ব্যুরোর সমর্থনে, বয়স্কদের সেবার বিশেষ অ্যাপ্লিকেশন চালু করা হয়েছে। এটি প্রধানত স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করে।

এখন ম্যাকাও-এর সেবাসংস্থাসমূহের সমিতি জাতীয় উন্নয়নের পরিকল্পনা এবং কুয়াংতং, হংকং ও ম্যাকও বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের নির্মাণের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে ম্যাকাও সেবাসংস্থাসমূহের সমিতি কুয়াংতং প্রদেশের চংশান, চুহাই ও হেংছিনে পরিষেবা কার্যালয় খুলেছে। উ বলেন, তিনি হংকংয়ে জন্মগ্রহণ করেন। কুয়াংচৌ চিনান বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময় স্বামীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। বিয়ে করার পর তিনি স্বামীর জন্মস্থান ম্যাকাও আসেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চল তাঁর কাছে সুপরিচিত। তিনি এ অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে গিয়েছেন। তিনি এ অঞ্চলকে ভালবাসেন।

উ সিয়াও লি’র মনে হয়, জাতীয় উন্নয়নের পরিকল্পনায় সংযুক্ত হয়ে ম্যাকও-এর সেবাসংস্থাসমূহের সমিতির সেবা আরও উচ্চ মানে উঠে যাবে। তাঁরা বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের মতো সামাজিক পরিষেবার মানদন্ড গড়ে তোলার আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দেশের সমর্থনে ম্যাকাও আরও দ্রুত উন্নত হবে। আমরা অব্যাহতভাবে ম্যাকাও-এর সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য নিজেদের অবদান রাখতে চাই।”

সূত্র: ছাই-আলিম-ওয়াং হাইমান,চায়না মিডিয়া গ্রুপ।। বিডি টাইমস নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে