পটুয়াখালী গলাচিপা অফিসার্স ক্লাব হলরুমে শনিবার(৩০ নভেম্বর) সকালে নদী ও প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ এর উদ্যোগে নদী ও জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গলাচিপা উপজেলার সহকারী কমিশানার (ভূমি) মোঃ নাসিম রেজার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিতি ছিলেন নোঙর বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠিাতা সভাপতি সুমন শামস। এ সময় সুমন শামস বলেন নদীমাতৃক বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় আগামীদিনের রাজনীতি চাই নদী ও পরিবেশ কেন্দ্রিক। নদীমাকতৃক বাংলাদেশের নদীপথে আমাদের অবহেলায় গত ৫৩ বছরে প্রায় বিশ হাজার নিহত যাত্রীদের স্বরণে ২৩ মে জাতীয় নদী দিবস ঘোষণা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের বড় বড় নদী ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে, পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। আবার নদীর নাব্যতা ও প্রবাহ কমে যাওয়া প্রভাব ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তনে।
জাতিসংঘভুক্ত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, ৩৩ বছরের মধ্যে গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন নদ-নদীর এর ফলে ৫০ বছরের মধ্যে বিশ্বের বড় বড় হিমবাহের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গত বছর। হিমবাহের পরিমাণ কমার কারণে অনেক নদীর পানির মাত্রা কিছুটা কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদশের উপকূলীয় অঞ্চসহ সমগ্র পৃথিবী আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখামুখি দাড়িয়েছে। এ সংকট সমগ্র বিশ্বের মানবজাতির জন্য অশনি সংকেত। এ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি এবং পরিবেশ রক্ষার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের নদ-নদী দখল-দূষণ মুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি উপকূলিয় অঞ্চলের অধীবাসীদের আরো বেশি সচেতন করতে হবে। তাই আগামি প্রজন্মকে সুন্দর একটি পৃথিবী উপহার দিতে এই কার্যক্রম দেশব্যাপী চলমান থাকবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে প্রচুর পরিমাণ বৃক্ষ রোপন এবং নদী, নালা, খাল-বিল, কুপুর, জলাশয় রক্ষায় কল শ্রেণি পেশার নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে।
জাতিসংঘভুক্ত বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এক সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, ৩৩ বছরের মধ্যে গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন নদ-নদীর এর ফলে ৫০ বছরের মধ্যে বিশ্বের বড় বড় হিমবাহের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গত বছর। হিমবাহের পরিমাণ কমার কারণে অনেক নদীর পানির মাত্রা কিছুটা কমেছে। অনুষ্ঠিানের সভাপতি সহকারী কমিশানার (ভূমি) মোঃ নাসিম রেজা বলেন, একটি দেশের প্রাণ হচ্ছে নদী, এ নদীকে বাচাঁতে সরকারের চলমান কর্মসূচীর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সহযোগীতায় স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, তার মধ্যে ‘নোঙর’ অন্যতম। তিনি আরো বলেন, নদী ও পরিবেশ রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। পাশাপাশি পরিবেশ জনসচেতনতায় জনসাধারণের আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন গলাচিপা উপজেলা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আসাদুর রহমান, প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, গলাচিপা ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ মোঃ রফিকুল ইসলাম, পটুয়াখালী নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন এবং গোলখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাসিরুদ্দিন হাওলাদার। সেমিনার শেষে আমন্ত্রিত তিথিবৃন্দ স্মৃতি হিসেবে বাংলাদেশ-তুরস্ক ফ্রেডশীফ স্কুলে একটি ফলজি গাছের চারা রোপন করেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ। বৃক্ষরোপণ শেষে রামরাবাদ নদী ভাঙ্গণ এলাকা পরিদর্শনের সময় নদী দখল-দূষণ মুক্ত করা, প্লাষ্টিক ব্যাবহার থেকে বিরত থাকতে, যত্রতত্র প্লাষ্টিক বর্জ না ফেলা, জলবায়ু পরিবর্তণে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় গণসচেতনতার পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করার অঙ্গিকার করেন গলাচিপা শাখার সদস্যরা।
উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কার্মকর্তা মাহাবু হাসান শিবলীর সঞ্চলানায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নোঙর-গলাচিপা শাখার আহব্বায়ক মু. খালিদ হোসেন মিল্টন এবং সমাপনী বক্ত্য রাখেন নোঙর-গলাচিপা শাখার সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান জুয়েল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জনাব ফজলে সানি, এফ এইচ সবুজ, জাহাঙ্গীর হোসেন জনিসহ গলাচিপা শাখার সকল সদস্যবৃন্দ।