জহির সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা ।। আজ ৮’মে(রবিবার)বিশ্ব মা দিবস। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও মধুর শব্দটি হচ্ছে ‘মা’। যার কল্যাণে মানুষ পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখতে পায়। সেই মমতাময়ী মায়ের স্মরণে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার ‘বিশ্ব মা দিবস’ পালন করা হয়। তবে, বেশির ভাগের মতে, কোনো দিনক্ষণ ঠিক করে মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানানো যায় না, মায়ের জন্য সন্তানের ভালোবাসা থাকে প্রতিদিনই। ‘মা’ মাত্র এক অক্ষরের শব্দটির মধ্যে যে গভীরতা ও ভালোবাসা-তা অন্য আর কোনো শব্দের মধ্যে যেন নেই। মা হলো চিরন্তন এক আশ্রয়ের নাম। মা শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে স্নেহ, মমতা আর অকৃত্রিম ভালোবাসা।
জন্মদাত্রী মায়ের কাছ থেকে একজন মানুষ যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পায় তা পৃথিবীতে অন্য কারও কাছ থেকে পায় না।“মা” একটি সুমিষ্ট শব্দ। এই শব্দের গভীরতা যে কত, তা সবাই জানেন। জীবনের দুর্বিষহ মুহূর্তে আপনার পাশে কি থাকবে? আপনার মা। আপনাকে জন্ম দিয়েছেন কে?আপনার মা। আপনার সফলতা কামনা করেন কে?আপনার মা। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আপনার মা আপনার সঙ্গে রয়েছে। মা সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন মনীষী বিভিন্ন উক্তি দিয়ে গেছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন।বাস্তব জীবনে মা আমাদের প্রতি যে ত্যাগ স্বীকার করেন, তা অন্য কেউ করেন না।তাই মায়ের আসন সবার উপরে। প্রত্যেকটি ধর্মে মাকে সর্বোচ্চ আসনে উন্নীত করা হয়েছে। “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত” স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই মা যেমন আমাদের জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তেমনি তাদের সুখে-দুঃখে ও আমরা পাশে থাকবো। আপনি যদি একজন প্রকৃত মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে মাকে অবশ্যই ভালোবাসবেন। মায়ের যে চাওয়া-পাওয়া রয়েছে, সেটি পূরণ করবেন। প্রতিবছর মা দিবস আসে। এই মা দিবস কখন তা অনেকেই জানতে চান। আজ সে বিষয় নিয়েই কিছু কথা।শুধু যে মা দিবসে মায়ের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে, এমনটা নয়। মায়ের প্রতি ভালোবাসা সর্বক্ষণে, সর্ব মুহূর্তে উজাড় করে দিতে হবে। কারণ মা যেমন তার জীবনকে আমাদের জীবনের উন্নতির জন্য উজাড় করে দিয়েছেন, তেমনভাবে আমাদেরকে ও তাই করতে হবে।মা যাতে মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনি আপনার মাকে ভালবাসেন। তাই মায়ের জন্য সর্বোচ্চটা করতে আপনি প্রস্তুত। যদি মাকে ছোট কিছু উপহার দেন, তাহলে মা খুশি হয়ে যায়।অথচ অন্য কোন মানুষকে অতিরিক্ত দামি উপহার দিলেও সে ব্যাক্তিটির মন পাওয়া যায় না। তাহলে ভেবে দেখুন তো, মা আপনাকে কতটা ভালোবাসে আর আপনাকে কতটা মূল্যায়ন করে? তাই সামনে মা দিবসে আপনার মাকে উপহার দিন। তাকে আপনি ভালোবাসেন, একথাটি জানান। দেখবেন, তার চোখের অশ্রু ধারা বইছে। আপনার জন্য মন খুলে দোয়া করছে।
মা একটি অমূল্য রতন। মায়ের সাথে পৃথিবীর কোন জিনিস বা অন্য কোন কিছুর সাথে বিনিময় করা সম্ভব নয়। মায়ের বিকল্প মা-ই।আপনার মাকে আপনি ভালবাসেন এবং আপনার সর্বোচ্চ দিয়ে মনে প্রাণে ভালোবাসুন। মা আপনার জীবনে যেমন প্রভাব ফেলেছে, ঠিক তেমনি আপনিও বোঝান তার জন্যই আপনার জীবনটা সুন্দর ভাবে গড়ে উঠেছে। মা দিবসে তাকে উপহার দিন। তার সাথে দিনটি কাটান। তাহলে দেখবেন তিনি অনেক খুশি হয়েছেন। তাই আমাদের মা দিবস সম্পর্কে আমাদের সকল সন্তানদেরই জানা উচিত বা তা কবে তা জেনে নিতে হবে। এই মা দিবসটি ২০২২ সালের মে মাসের ০৮ তারিখে উদযাপন করা হবে। আপনি এই তারিখে আপনার মাকে নিয়ে একটি সুন্দর মুহূর্ত কাটান। তাকে জানান আপনার মনের কথা।তাকে বলুন তার জন্যই আপনার জীবনটা বর্তমানের অবস্থানে এসেছে। তাই সকলের মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি। শুভ হোক মা দিবস, বেঁচে থাকুক প্রত্যেক মা সকল সন্তানের অন্তরে অনেকে বলে থাকেন,প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের এক নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগ নেন। ওই বছরই মারিয়া তার সান ডে স্কুলে প্রথম মাতৃদিবস পালন করা শুরু করেন। এরপর ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।এভাবেই ‘মা’ দিবস পালনের যাত্রা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানিসহ বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশে সন্তানরা তাদের নিজ নিজ মাকে ফুল, চকোলেট, শাড়ি, বইসহ প্রিয় উপহার দেবেন। অনেকেই মাকে নিয়ে আজ ঘুরতে বের হবেন। এ’ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাকে নিয়ে সুন্দর আবেগঘন পোস্ট দেবেন। মা দিবস বা মাতৃ দিবস হল পৃথিবীর সকল মায়েদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি বিশেষ দিন। কারণ পৃথিবীতে সকল কিছুর মূল্য পরিশোধ করা হলেও মায়ের ভালোবাসা আমার স্নেহ মাতৃত্ব বোধের কখনো দাম দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এই অমূল্য সম্পর্ককে সম্মান জানাতে পৃথিবীব্যাপী বিশ্ব মা দিবস পালনের ইতিহাস রচিত হয়েছে। পৃথিবীর সকল মায়েদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য প্রতিবছর ৮ মে বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এইদিন পৃথিবীতে যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মা দিবস পালিত হয়ে থাকে। আমরা আমাদের এই বিশ্ব মা দিবসে(৮’মে) সকল মা দের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে যেন না ভূলি।
বিশ্ব মা দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।।বিশ্ব মা দিবসের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় বেশকিছু উপ কথা প্রচলিত আছে। একটি গোষ্ঠীর মধ্যে এই দিনটি সূত্রপাত প্রাচীন গ্রিসে মাতৃ আরাধনার প্রথা থেকে সেখানে গ্রীক দেবতাদের মধ্যে এক বিশিষ্ট দেবী সিবেল এর উদ্দেশ্যে পালন করা হতো একটি উৎসব। জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত “মাদার্স ডে প্রক্লামেশন” বা “মা দিবসের ঘোষণাপত্র” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে অন্যতম। আমেরিকান গৃহযুদ্ধ ও ফ্রাঙ্কো-প্রুশীয় যুদ্ধের নৃশংসতার বিরুদ্ধে ১৮৭০ সালে রচিত হোই-এর মা দিবসের ঘোষণাপত্রটি ছিল একটি শান্তিকামী প্রতিক্রিয়া। রাজনৈতিক স্তরে সমাজকে গঠন করার ক্ষেত্রে নারীর একটি দায়িত্ব আছে, হোই-এর এই নারীবাদী বিশ্বাস ঘোষণাপত্রটির মধ্যে নিহিত ছিল।এবছরের মাদার্স ডে? জানুন এই বিশেষ দিনের গুরুত। আমরা সকলেই চোখ বন্ধ করে যার ওপর ভরসা করতে পারি। যিনি কখনও আমাদের ইচ্ছাকে অস্বীকার করে না, সেই নিঃশর্ত ভালোবাসা এবং সৌন্দর্যের সম্পর্ককে আমরা মা (Mother) বলি। কথাতেই বলে, যেহেতু ঈশ্বর সর্বত্র উপস্থিত থাকতে পারেন না, তাই তিনি ‘মায়েদের’ তৈরি করেছিলেন। বেশিরভাগ মহিলারাই বলেন ‘মাতৃত্ব’ তাঁদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ গুণ। সকলের জীবনের প্রথম গাইড, দার্শনিক, পরামর্শদাতা এবং বন্ধু হয় ‘মা’। প্রতি বছর, বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘মাতৃ দিবস’ বা ‘মাদার্স ডে’ (Mother’s Day)। এ’বছর মাদার্স ডে ২০২২ তারিখ (Mother’s Day 2022)কবে পড়েছে? মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পৃথিবী জুড়ে পালিত হয় ‘মাদার্স ডে’। এই বছর এই বিশেষ দিনটি পড়েছে ৮’মে। মাদার্স ডে-র আরো ইতিহাস (Mother’s Day History) রয়েছে যা নিম্নে আলোকপাত হলো। ১৯০৮ সালে আন্না জার্ভিস (Anna Jarvis) নামে এক ব্যক্তি প্রথম মাদার্স ডে উদযাপন করেছিলেন। পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় নিজের মায়ের স্মৃতি রূপে এই বিশেষ দিনটি উৎসর্গ করেছিলেন আন্না। তখন থেকেই এটি আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস হিসাবে পালিত হয়। মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা,সম্মান এবং ভালোবাসা জানাতে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উদযাপিত হয় মাদার্স ডে। এই দিনটিতে আমরা আমাদের মায়েদের ধন্যবাদ জানাই, তাঁদের প্রতি আমাদের ভালবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। যদিও বিভিন্ন দেশ ভিন্ন কায়দায় উদযাপন করা হয় মাদার্স ডে। সেরকমই ফাদার্স ডে, সিবলিংস ডে, গ্র্যান্ড পেরেন্টস ডে, ফ্যামিলি ডে, ফেন্ডশিপ ডে-র মতো বিশেষ দিনগুলি পালন করা হয়। এই এই দিনটি বিশ্বজুড়ে মাতৃত্ব ও মাতৃসত্তার গুরুত্ব এবং তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দেয়। যদিও অনেকে মনে করেন শুধু একদিন কেন, রোজ হয়ে উঠুক মাতৃ দিবস। তবে এই একবিংশ শতাব্দীতে,মায়েদের জন্য প্রতিটি দিন স্পেশাল করে তোলা কর্ম ব্যস্ততার ফাঁকে অসম্ভব। তাই একটা দিন যদি তাঁরা একটু ‘স্পেশাল ফিল’ করেন, তাহলে ক্ষতি কী? আবার অনেকে বল থাকেন,প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের এক নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগ নেন। ওই বছরই মারিয়া তার সান ডে স্কুলে প্রথম মাতৃদিবস পালন করা শুরু করেন।এরপর ১৯১৪ সালের ৮’মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এভাবেই ‘মা’ দিবস পালনের যাত্রা শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানিসহ বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশে সন্তানরা তাদের নিজ নিজ মাকে ফুল, চকোলেট, শাড়ি, বইসহ প্রিয় উপহার দেবেন। অনেকেই মাকে নিয়ে আজ ঘুরতে বের হবেন।এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাকে নিয়ে সুন্দর আবেগঘন পোস্ট দেবেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ