কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি।। এবছরে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে রবী ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিদিনই কুঠিবাড়িতে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়। মহামারী করোনার কারণে বিগত সময়ের চেয়ে এবারে দর্শনার্থী বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কুঠিবাড়ির আঙ্গিনায় বাঁশ-কাঠ-ত্রিপল দিয়ে চলছে মঞ্চ ও দর্শনার্থীদের বসার স্থান নির্মাণের শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। বিরূপ আবহাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলেও ঝড়-বৃষ্টি মাথায় রেখেই চলছে এই আয়োজন। মঞ্চ নির্মাণ শ্রমিকরা জানিয়েছে আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। অনুষ্ঠানে কবিগুরুর সাহিত্য ও শিল্পজীবন নিয়ে আলোচনা,গান ও কবিতা। এখানে এসে কবিগুরুর শিল্প ও সাহিত্যকর্ম ব্যক্তিজীবনে অনুপ্রেরণা যোগায় এমনটায় মনে করেন রবী ঠাকুরের ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবার জাতীয়ভাবে উদযাপিত হতে যাচ্ছে রবীন্দ্র জয়ন্তী। সে আয়োজনকে সফল করতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে। এব্যাপারে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মুখলেছুর রহমান ভুইয়া জানান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশানের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মত শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে জাতীয়ভাবে অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলার বাহিনী তাদের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে।অনুষ্ঠান এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে আসা অতিথি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন মহামারী করোনা প্রাদুর্ভাবে বন্ধ ছিল সকল আয়োজন। কোভিট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় এবছরে কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত শিলাইদহে জাতীয়ভাবে বিশ্বকবির ১৬১তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন করা হবে।
বরিবার (৮ মে) পঁচিশে বৈশাখ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, জাতীয় সাংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এছাড়া এবারের রবীন্দ্রনাথ জয়ন্তী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা।
উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এই অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তী সময়ে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে জমিদার হয়ে আসেন। এখানে শিলাইদহে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারী পরিচালনা করেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করে তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালীসহ আরও বিভিন্ন গ্রন্থ। রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে বসেই গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের অনুবাদের কাজ শুরু করেন। পরে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী গ্রন্থের অনুবাদে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এখানে বসে রচনা করা বিশ্বকবির অসংখ্য গান, কবিতা ও সাহিত্যকর্ম বাঙলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ।
কুষ্টিয়া নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইম্স নিউজ