সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৩৩টি দেশের মধ্যে ৫৭তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেস্ক ২০১৭ অনুযায়ী বাংলাদেশ এই স্থান পেয়েছে। এতে একেকটি দেশের সেনা সংখ্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন সামরিক সামর্থের দিক বিবেচনা করা হয়েছে। খবর ইউএনবির।
পৃথিবীর ১৩৩টি দেশের মধ্যে সামরিক শক্তি, বিশেষ করে আঞ্চলিক আধিপত্যের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭তম। ২০১৭ সালের নানা তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্লেষণধর্মী ওয়েবসাইট ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’ (জিএফপি) এ তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় আগের মতই প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিএফপি’র ১২২টি দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫৩তম। ওই তালিকাতেও এবারের মতো শীর্ষস্থানটি যুক্তরাষ্ট্রের দখলে ছিল। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল রাশিয়া। এরপরই যথাক্রমে তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে ছিল চীন ও ভারত।
সামরিক শক্তির দিক থেকে সম্প্রতি ব্যাপক আলোচিত উত্তর কোরিয়াকে এবারের তালিকার ২৩তম স্থানে রাখা হয়েছে। মিয়ানমার স্থান পেয়েছে ৩১ নম্বরে। পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বেড়েছে। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের অবস্থান ছিল ১৭-তে। এবার ১৩তম অবস্থান নিয়ে প্রথমবারের মতো তারা এসেছে শীর্ষ ১৫ তে। জিএফপি জানায়, এবার ১৩৩টি দেশের এ তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে পরমাণু অস্ত্রের মজুদ থাকার বিষয়টি এই ক্রম নির্ধারণে বিবেচনা করা হয়নি। তবে এক্ষেত্রে স্বীকৃতি ও সন্দেহকে বোনাস হিসেবে রাখা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আঞ্চলিক আধিপত্য। এমনকি মোট অস্ত্রের সংখ্যাও প্রাধান্য পায়নি।
দেশগুলোর সক্ষমতা ৫০টি বিভাগে পর্যালোচনা করেছে জিএফপি। বলা হয়েছে, এই বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে সামরিক সরঞ্জাম, প্রাকৃতিক সম্পদ, শিল্প, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, সেনাসংখ্যা ও প্রযুক্তিসহ অন্যান্য বিষয়। এ তালিকা সম্পর্কে ইন্ডিয়া টাইমস-এর বিশ্লেষণ ভারত ও চীনের ওপরের দিকে থাকার ক্ষেত্রে সেনাসংখ্যা সহায়ক হয়েছে। জিএফপি জানিয়েছে, ভারতের মোট মোতায়েনযোগ্য সেনাসদস্য প্রায় ১৩ লাখ আর পাকিস্তানের প্রায় ৬ লাখ ৩৭ হাজার। ভারতের সামরিক বরাদ্দ ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার। আর পাকিস্তানের ৭০০ কোটি ডলার। ভারতের দুই হাজার ১০২টি বিমানের বিপরীতে রয়েছে পাকিস্তানের ৯৫১টি বিমান। আর ভারতের চার হাজার ৪২৬টি ট্যাংকের বিপরীতে পাকিস্তানের রয়েছে ২,৯২৪টি ট্যাঙ্ক। ভারতের ৬৭৬টি জঙ্গি বিমানের বিপরীতে পাকিস্তানের রয়েছে ৩০১টি। ভারতের ৩টি এয়ারক্র্যাফট ক্যারিয়ার ও ১১টি ডেস্ট্রয়ার থাকলেও পাকিস্তানের একটিও নেই । তবে অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সেলফ প্রপেল্ড আর্টিলারি এবং নৌপথের সক্ষমতা বিভাগে পাকিস্তান ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। পাকিস্তানের অ্যাটাক হেলিকপ্টার ৫২টি আর ভারতের ১৬টি।
জিএফএস-এর নিরীক্ষা, ভারত চীনের চেয়ে এগিয়ে আছে সেনাসংখ্যায়। ভারতের মোট সেনাসদস্য প্রায় ৪২ লাখ আর চীনের প্রায় ৩৭ লাখ। অবশ্য সক্রিয় জনশক্তির সংখ্যায় চীন ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। চীনের মোতায়েনযোগ্য সেনাসদস্য প্রায় ২২ লাখ আর ভারতের মোতায়েনযোগ্য সেনাসদস্য প্রায় ১৩ লাখ। এ ছাড়াও ভারতের সংরক্ষিত সেনাসদস্য প্রায় ২৮ লাখ। আর চীনের সংরক্ষিত সেনাসদস্য প্রায় ১৪ লাখ। সামরিক বাজেট বরাদ্দেও ভারতের চেয়ে তিনগুণ এগিয়ে আছে চীন। ভারত ও চীনের পর সেরা ২০টি দেশের মধ্যে আরও রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান, তুরস্ক, জার্মানি, মিসর, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, ইসরায়েল, ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, পেলান্ড ও থাইল্যান্ড। ২১ নম্বরে রয়েছে ইরান। তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৫৭। এরপর পর রয়েছে আজারবাইজান, ইরাক, ইউনাইটেড আরব আমিরাত, বলিভিয়া, পর্তুগাল, ইয়েমেন, সিংগাপুর ও বেলজিয়াম। তালিকার সবচেয়ে নিচে রয়েছে ভুটান।
বাংলাদেশে সম্পর্কে জানানো হয়েছে, ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮৬ হাজার ৮৮২ জন সংখ্যার এ দেশের জনশক্তি তিন কোটি ৭০ লাখ। এর মধ্যে সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার উপযোগী তিন কোটি ৩০ লাখ সামরিক বাহিনীতে রয়েছে দুই কোটি ২৫ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় জনবল এক লাখ ৬০ হাজার। আর রিজার্ভ ৬৫ হাজার।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইম্স নিউজ