অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা এবং অবৈধভাবে ইউরোপে অবস্থানরতদের ফিরিয়ে আনার বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক’দিন ধরে আলোচনা চলছে।
কিন্তু একসঙ্গে এত মানুষকে দেশে ফেরত পাঠালে তাদের পরিবার এবং অর্থনীতির ওপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদের পুনর্বাসন নিয়েও সংশয় থাকছে।
ইরাক বা লিবিয়া ফেরত অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ফর দা রাইটস অফ ইমিগ্রান্টস। এই সংগঠনটির কর্মকর্তা সাইফুল হক বলছিলেন, “এক সাথে এত মানুষ বেকার অবস্থায় বাংলাদেশে ফেরত চলে এলে অর্থনীতিতে খুব খারাপ প্রভাব পড়বে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের পরিবার”।
মিস্টার হক বলেন, হঠাৎ করে যাদের এভাবে পাঠানো হয়, প্রথমেই তারা পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়ে যায়।
তিনি বলেন, ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগই বৈধভাবে যায়। কিন্তু ওখানে গিয়ে তারা অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে অনেকেই দশ বছর, ধরে পনেরো বছর ধরে আছেন। চেষ্টা করছেন নিয়মিত হওয়ার জন্য।
এখানে সরকারের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। রিটার্নিদের ইস্যু প্রবাসী নিতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার উচিত বলে মনে করেন তিনি।
ইইউ ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী গ্রীস থেকে যেসব অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে তাদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশিও রয়েছেন।
সাইফুল হক বলেন, স্বল্পমূল্যে তাদের শ্রম এতদিন ঠিকই ব্যবহার করেছে ইওরোপের দেশগুলো। এখন তাদেরও দায়িত্ব রয়ে যায়।
“যারা অনেকদিন ধরে ইউরোপে আছেন এবং শ্রম দিয়ে অবদান রাখছেন তাদের ক্ষেত্রে এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি”।
যেসব লোক এভাবে অনিয়মিত আছে কিন্তু এমন নয় যে তারা কাগজ ছাড়া (ডকুমেন্ট ছাড়া) আছে।
এখনকার যে পরিস্থিতি হচ্ছে ইউরোপে যে শরণার্থী সমস্যা আছে সেটাকে নিয়ে যারা অনিয়মিত আছে তাদের ওপর এই খড়গ এসে নামছেবলে আরও উল্লেখ করেন তিনি।
তাদের পুনর্বাসনে কিংবা কাজের সুযোগ তৈরিতে সরকারের দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারের এধরনের রিটার্নিদের বিষয়ে নীতিমালা আছে কিন্তু এখনো কোনও কার্যকর ভূমিকা নেয়নি।
মিস্টার হকের মতে, তাদের ফেরত পাঠানোর আগে সরকারকেও ব্যবস্থা নিতে হবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও নিতে হবে।
“আমরা আগে চাইবো তাদের নিয়মিত করা হোক। যদি না করা হয়, তাহলে একসাথে সবাইকে যাতে না পাঠানো হয় এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রেখে যেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়”।