নুরনবী সরকার, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিজয়ী পক্ষের (নৌকা প্রতীক) সমর্থকের চলাচলের রাস্তা কেটে ও বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পরাজিত পক্ষের (ঘোড়া প্রতীক) সমর্থক এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনায় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজয়ী পক্ষের সমর্থক ক্ষতিগ্রস্ত প্রেমানন্দ রায় (৩০)। এর আগে বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে রাস্তা কেটে ফেলার এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত কুঞ্জ বিহারীর পৈত্রিক সূত্রে তৈরি করা রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন প্রেমানন্দের দুই ছেলের পরিবার।
তবে রাস্তাটি তার প্রতিবেশী যুধিষ্ঠির জমির পাশ দিয়ে হওয়ায় রাস্তাটি পরিবর্তন করা নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধও কয়েক বছরের। বিগত নির্বাচনে মৃত কুঞ্জ বিহারীর ছেলে প্রেমানন্দ চলবলা ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের কর্মী ছিলেন। তার প্রতিবেশী যুধিষ্ঠি বর্ম্মন ও তার ছেলেরা ঘোড়া প্রতীকের কর্মী সমর্থক ছিলেন। নির্বাচনে দু’পক্ষ দুই প্রতীকের কাজ করায় আগের রাস্তার দ্বন্দ্ব আরও চরম পর্যায়ে পৌঁছে।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় হলে ক্ষুব্ধ হন ঘোড়া প্রতীকের যুধিষ্ঠির পরিবার। প্রেমানন্দ রায়ের বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটি যুধিষ্ঠির জমির পাশ দিয়ে হওয়ায় গত ৯ ডিসেম্বর সবাই বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে দলবল নিয়ে রাস্তাটি কেটে ফেলেন যুধিষ্ঠির ছেলেরা। খবর পেয়ে ছুটে এসে রাস্তা কাটতে নিষেধ করায় প্রতিপক্ষ তাকে ধাওয়া দিলে পালিয়ে জীবন রক্ষা করেন প্রেমানন্দ। রাস্তাটি কেটে বেড়া ঘিরে চাষাবাদের জন্য প্রস্তুতের চেষ্টা করছেন যুধিষ্ঠির পরিবার। এ ঘটনায় প্রেমানন্দ বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় যুধিষ্ঠি বর্ম্মনকে প্রধান করে নয় জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ৮০-৯০ জনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বাদী প্রেমানন্দ রায় বলেন, নৌকার কর্মী হওয়ায় দীর্ঘ ৮০-৯০ বছরের রাস্তাটি নৌকা বিরোধিরা কেটে দিয়ে আমাদের জিম্মি করেছে। তাদের কথায় না চললে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছে। রাস্তা কাটার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ন্যায় দাবি করছি।
এদিকে, যুধিষ্ঠির ছেলে অভিযুক্ত কার্তিক চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, আমাদের জমির মাঝ দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন প্রেমানন্দ রায় পরিবার। এতে জমিটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। তাই ওই রাস্তাটি কেটে দিয়ে জমি ঠিক করেছি। এতে তাদের সমস্যা হয়ে থাকলে, পাশে জমি রয়েছে, তারা প্রয়োজন মনে করলে নিজেদের জমির সঙ্গে যুক্ত করে রাস্তা তৈরি করবেন। রাস্তা কাটার বিষয়টি নির্বাচনী প্রতিহিংসা নয় বলেও দাবি করেন কার্তিক চন্দ্র বর্ম্মন। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমনিরহাট নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে