জহির সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সৎ মায়ের বিরুদ্ধে পানিতে চুবিয়ে জান্নাতুল মাওয়া নামে চার বছরের এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের চেঙ্গামুড়া গ্রামের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে স্থানীয় লোকজন শিশু জান্নাতের লাশ উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনায় পুলিশ শিশুটির সৎ মা রোহেনা বেগমকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালপুর চেঙ্গামুড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: তাজুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন বিগত দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেন। এ সময় প্রথম স্ত্রী তানিয়া দুই বছরের শিশুকন্যা জান্নাতকে দাদা দাদির কাছে রেখে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তিলিনগরে চলে যান। দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ি নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের সওদাগরকান্দি গ্রামে। এ দিকে মা-বাবার সংসার ভেঙে যাওয়ার পর থেকে হতদরিদ্র বীর মুক্তিযোদ্ধা দাদা ও দাদির কাছেই বড় হতে থাকে জান্নাত। এরই মধ্যে কবির হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে আরো একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়। এরপর থেকে দাদা দাদি জান্নাতকে আদর করলে তার সৎ মা রোহেনার প্রচণ্ড ঈর্ষা শুরু করেন। ফলে অনেক সময় মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত শিশু জান্নাতের সাথে রূঢ় আচরণ করতেন তিনি (সৎ মা)।
মঙ্গলবার সকালে জান্নাতের দাদা দাদি বাড়ির বাইরে গেলে স্থানীয় লোকজন সৎ মাকে ১০ মাস বয়সী নিজের শিশুর পাশাপাশি সৎ মেয়ে জান্নাতকে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে নামাতে দেখেন। কিন্তু পুকুর থেকে উঠে আসার সময় রোহেনা শুধু নিজের মেয়েকে নিয়ে উঠলে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজনের সন্দেহ হয়। পরে তারা রোহেনাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন, জান্নাত পানিতে ডুবে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় লোকজন পুকুরে নেমে খুঁজাখুঁজি করে জান্নাতের লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় পুলিশ নিহত শিশু জান্নাতের সৎ মা etরোহেনা বেগমকে (৩৫) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে নিহত শিশুর জান্নাতের দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: তাজুল ইসলামের অভিযোগ করেন, সৎ মা রোহেনা জান্নাতকে গলা টিপে ও পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেছে। প্রিয় নাতনীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় দাদিও কেঁদে কেঁদে একই অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আজাদ রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে ছুটে গেছিলাম। মৃত শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপালের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। শিশুটির সৎ মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক।। বিডি টাইমস নিউজ
ReplyReply allForward

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে