ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ রাসেল দিবস ২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে শেখ রাসেল দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, কোমলমতি শিশু শেখ রাসেল ছিলেন বহুবিধ প্রতিভার অধিকারী বিকাশমান একটি ফুল, দুর্বৃত্তরা সেই ফুলকে পরিপূর্ণ বিকশিত হবার আগেই ছিড়ে ফেলে। তিনি বলেন, শেখ রাসেলের জন্মদিনটা তাঁর মৃত্যুদিনের কারনে ম্লান হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর জন্মটা আর দশটা বাচ্চার মতো স্বাভাবিক পরিবেশে ছিলো না রাজনৈতিক টালমাটাল পরিবেশের মধ্যেই জন্মগ্রহন করেন শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সানিধ্যে খুব বেশি একটা পায়নি শেখ রাসেল। সরকার প্রধানের ছেলে বলে তাঁর চলনে বলনে কোন বিলাসিতা ছিলো না আর দশটা সাধারন মানুষের মতোই ছিলো তাদের জীবনযাপন।
তিনি আরো বলেন, এই পরিবারের প্রতিটি মানুষের রক্তের মুল্য আমাদের শোধ করতে হবে বর্তমান ও আগামী প্রজন্মকে না হলে আমরা জাতি হিসাবে ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে থাকবো। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান শেখ রাসেল সম্পর্কে স্মৃতিচারনে বলেন, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা একটি বইয়ে শেখ রাসেলকে সম্পর্কে লেখেন, যখন শেখ রাসেলকে পেলাম তখন মনে হলো আমরা যেন একটি খেলার পুতুল পেলাম। তিনি বলেন, মাত্র ১০ বছর বয়সে পৃথিবীর ইতিহাসে নির্মম, জঘন্য ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের শিকার হন শিশু রাসেল। তিনি এই ঘৃনিত হত্যাকান্ডের শিকার ১৫ আগস্টের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং দন্ডিত খুনিরা যারা এখনও পলাতক রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তাদের ধরে এনে দ্রুত সাজা কার্যকর করবার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। অপর বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয় বলেন, আজ রাসেলের জন্মদিন পাশাপাশি চরম শোকের দিনও কারন ঘাতকেরা নৃশংস, ন্যাককারজনক ও কলংকজনক ঘটনা ঘটিয়েছে শিশু শেখ রাসেলকে হত্যার মধ্যে দিয়ে।
তিনি বাকি পলাতক দন্ডিত খুনিদের খুজে এনে দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর করবার জন্য উদাত্ত আহবান জানান। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মোঃ রবিউল হোসেন, প্রভোস্ট, শেখ রাসেল হল এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মু. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার (ভারঃ)। পরে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত রচনা, চিত্রাংকন ও বির্তক প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরন করা হয়। এর আগে শেখ রাসেল দীপ্ত জয়োল্লাস,অদম্য আত্মবিশ্বাস এই শ্লোগানকে সামনে রেখে “শেখ রাসেল দিবস” যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল “শেখ রাসেল দিবস”-২০২১ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে শেখ রাসেল হল চত্বরে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা ও শেখ রাসেল হলের পতাকা উত্তোলন।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড.মোঃ মাহবুবুর রহমান এবং শেখ রাসেল হলের পতাকা উত্তোলন করেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোঃ রবিউল হোসেন ও রেজিস্ট্রার(ভারঃ) মু. আতাউর রহমান। এরপর সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে শেখ রাসেল হল চত্বরে শেখ রাসেলে ভাস্কর্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া এবং রেজিস্ট্রার (ভারঃ) মু. আতাউর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে শেখ রাসেল ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য উন্মোক্ত করে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল, সামাজিক সংগঠন ও ছাত্রলীগ ইবি শাখার নেতাকর্মীবৃন্দ শেখ রাসেল ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে আনন্দের প্রতীক বেলুন উড়িয়ে শেখ রাসেল দিবস ২০২১ এর দিনব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া,রেজিস্ট্রার (ভারঃ) মু. আতাউর রহমান সহ সকল পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।এরপর শেখ রাসেল দিবস (শেখ রাসেলের জন্মদিন) উপলক্ষ্যে শেখ রাসেল হলের সামনে কেক কাটেন উপচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার(ভারঃ) মু. আতাউর রহমান, প্রফেসর ড. মোঃ রবিউল হোসেন, প্রভোস্ট, শেখ রাসেল হল, প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুল আরফিন, প্রফেসর ড.রেবা মন্ডল, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. মোঃ সোহেল, প্রধান প্রকৌশলী(ভারঃ) মুন্সী মোঃ তারেকসহ শেখ রাসেল হলের ছাত্রবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় ল্যারোটরী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ ও ছাত্রলীগ ইবি শাখার নেতাকর্মীবৃন্দ। এরপর শেখ রাসেল হলে শেখ রাসেল স্মৃতি পাঠাগার উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তপন কুমার রায়।
ক্যাম্পাস ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ