জহির সিকদার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি।। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রমত্তা মেঘনার প্রবল ভাঙনের খেলা চলছে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে। উপজেলার বীরগাঁও ইউনিয়নের কেদারখোলা গ্রামের ১,২ নং সিটে থাকা চারশত পরিবারের ঘরবাড়ি,পাঁচটি মসজিদ,চারটি কবরস্থান, একটি ঈদগাহ,কেদারখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতশত বিঘা ফসলি জমিজমা ভাঙ্গনের ফলে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সেই সাথে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামের মানচিত্র ।
প্রতিবছর শতশত কৃষিজমি, বাড়িঘর গ্রাস করছে সর্বনাশী মেঘনার বুকে । ফলে বাড়ছে উদ্বাস্ত ও ছিন্নমূলের সংখ্যা। মেঘনার ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে যাযাবরী জীবনযাপন করছে এখন অসংখ্য পরিবার। অব্যাহত এ ভাঙনের ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কেদারখোলা গ্রামটি মেঘনাগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বর্তমানে কেদারখোলার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ঝুকির মধ্যে রয়েছে একটি কবরস্থান, একটি মসজিদ ও একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গ্রামের শত শত ঘরবাড়ি,ফসলি জমিজমা। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙন রোধকল্পে ৪৫০ মিটার জায়গাতে জিও ব্যাগ দিয়েছে, বাকি অংশটুকুতে জিও ব্যাগ না থাকার কারণে অসংখ্য বাড়িঘর ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কেদারখোলা গ্রামের বাসিন্দা ডাক্তার ওয়ালী আহমেদ জানান,আমাদের গ্রামটি বালু মাটির উপর নদীর পাড়ে অবস্থিত বিধায় বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোত মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারনে ভিটের বালু সর যায় এবং এর ফলে ভাঙনের ভয়াবহতা চরম আকার ধারণ করে। তখন চোখের পলকে কয়েক একর জায়গা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। ঐ পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে সৃষ্টিকর্তার মুখপানে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
গ্রামের বাসিন্দা মো. লিল মিয়া বলেন, আমরা অসহায় মানূষ আমরা বাঁচতে চায়। এবাদুল করিম বুলবুল এমপি ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবী , দ্রুত আমাদের কেদারখোলা গ্রামে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মান করে দিয়ে আমাদের বাঁচান এবং আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিন।
একই গ্রামের বয়োবৃদ্ধ হুরন মিয়া জানান, এ পর্যন্ত তিনবার বাড়ি ঘর হারিয়েছি, এখন আমি বাস্তহারা। আমার জমিজমা,বাড়িঘর সব কিছুই রাক্ষুসে মেঘনার পেটে চলে গেছে।কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বিডি টাইমস নিউজ কে বলেন,মরণের আগে যদি ভাঙন প্রতিরোধ বাঁধ দেখে যেতে পারতাম, তাহলে মরেও শান্তি পেতাম।
বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী কবির আহমেদ বলেন, এভাবে মেঘনার ভাঙন অব্যাহত থাকলে কেদার খোলা গ্রামটি একসময় দেশের মানচিত্র থেকে সম্পূর্ণরুপে হারিয়ে যাবে। নদী ভাঙ্গন রোধকল্পে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার জন্য এবাদুল করিম বুলবুল এমপি ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে জোরালো দাবী জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিউজ ডেস্ক।।বিডি টাইমস নিউজ