বর্ষীয়ান রাজনীতিক এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের রাজনীতিতে এক গৌরবময় অধ্যায়ের অবসান ঘটলো। গণমানুষের নেতা হিসেবে সবার মন কেড়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। টানা ১৭ বছর ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র। বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রয়াণে শোকে মূহ্যমান চট্টগ্রামের মানুষ।
চট্টলবীর মহিউদ্দিন চৌধুরীর জন্ম ১৯৪৪ সালে রাউজানের গহিরা গ্রামে। বাবা হোসেন আহমদ চৌধুরী, মা বৌদেরা বেগম। স্কুল জীবন থেকেই সক্রিয় ছিলেন ছাত্র রাজনীতিতে। কলেজ জীবনে যুক্ত হন বিপ্লবী রাজনীতিতে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। বেশ ক’বার কারাবরণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে গিয়ে ধরাও পড়েছিলেন একবার। চার মাস অমানুষিক নির্যাতন ভোগের পর পালিয়ে মুক্ত হয়ে আবার যোগ দেন যুদ্ধে।
দেশ স্বাধীন হবার পর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ৭৫’এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মহিউদ্দিন চৌধুরী গড়ে তুলেছিলেন বিপ্লবী বাহিনী। পরে দলের নির্দেশেই প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সব সময়। ১৯৯১ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পর চট্টগ্রাম অঞ্চলে উদ্ধার কাজ চালাতে গড়ে তুলেছিলেন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।
১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন মহিউদ্দিন চৌধুরী। টানা তিনবারে সতের বছর ছিলেন নগরপিতা। জীবনভরই উচ্চকন্ঠ ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে।
চট্টগ্রামের নেতা হিসেবে অঞ্চলের উন্নয়নে কখনোই আপোষ করেননি। বন্দরনগরীর স্বার্থে নিজ দলের সরকারের বিরুদ্ধেও আন্দোলনে পিছপা হননি। সত্য আর গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজন্ম প্রতিবাদী এই মানুষটি শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন।
নিউজ ডেস্ক, বিডি টাইম্স নিউজ