দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত, হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ সোমবার থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে। প্রায় ৫ মাস বন্ধ থাকার পর শুধুমাত্র কক্সবাজার শহর এলাকার পর্যটন শিল্প প্রতিষ্ঠান সমুহ খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, গত ৫’ই আগস্ট অনুষ্ঠিত করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্তের আলোকে সীমিত পরিসরে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়া হচ্ছে। এই সময়ে পর্যটকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার পর্যটন শিল্পের সাথে বিভিন্ন ভাবে প্রায় ২ লাখ লোক জড়িত। তাদের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে সীমিত আকারে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন শিল্প খুলতে হবে। মেনে চলতে হবে এ বিষয়ে প্রণীত সকল বিধি নিষেধ।
জেলা প্রশাসক বলেন, হোটেল মোটেলসহ কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে বৈঠক করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারপরও কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্গন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এজন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে সার্বক্ষনিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজারে টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন- পর্যটক এবং পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনী প্রস্তত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলে যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সৈকতসহ সকল স্থানে বিচরণ করে তা কড়াকড়ি ভাবে লক্ষ্য রাখা হবে। দীর্ঘ ৫ মাস পর কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্ট, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে উচ্ছাস প্রকাশ করেছে। ইতিমধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য তারা প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে। এতে পর্যটন এলাকায় ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।
কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৫ মাস ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে বিপুল লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বিধি নিষেধ আরোপ করে হলেও পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। এতে এই শিল্পে জড়িত অর্ধ লাখ শ্রমিক কর্মচারির ঘরে আনন্দ ফিরে এসেছে। তিনি বলেন- আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ব্যবসা পরিচালনা করব। এই বিষয়ে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করে সতর্ক করা হয়েছে।
কক্সবাজারে তারকা হোটেল সীগাল এর প্রধান নির্বাহি ইমরোল ইসলাম চৌধুরী রুমি জানিয়েছেন- কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশাসনের সময় উপযোগি পদক্ষেপ। পর্যটকরাও এতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। অনেকে ইতিমধ্যে কক্সবাজার আসার জন্য অগ্রীম হোটেল বুকিং দিয়েছে। আশা করছি ১৭ আগষ্ট থেকে কক্সবাজারে পর্যটন শিল্প আবার চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
কক্সবাজার সৈকতে কীটকট ব্যবসায়ী হাসান আহমদ জানিয়েছেন- আগামী অক্টোবর থেকে কক্সবাজারে পর্যটন মওসুম শুরু হচ্ছে। এই সময়ের আগেই পর্যটন শিল্প উম্মুক্ত করে দেওয়ায় উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা দারুন খুশি। তারা আসন্ন পর্যটন মওসুমের জন্য সময় নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে পারবে।/বাসস
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ