সপ্তাহের সেরা দিন শুক্রবার তথা জুমআর দিন। এটি দুনিয়ার অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ দিন। জুম’আ নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করা হয়েছে। জুমআর নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ। জুমু’আহ শব্দটি আরবি। এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা, জুমার দিনে নামাজের আজান দিলে তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমআ, আয়াত : ৯)‘অতপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)
আদম (আ.)-কে সৃষ্টি
জুমার দিন আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। এদিনে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেছেন। এদিনে তিনি জান্নাত থেকে বের হয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়াছে। এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮৫৪)
জুমার দিনে করণীয়
এ দিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি দ্রুত জুমার নামাজে উপস্থিত হওয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে উত্তম পোশাক পরিধান করে, সুগন্ধি থাকলে তা ব্যবহার করে, জুমার নামাজে আসে এবং অন্য মুসল্লিদের গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যায়, নির্ধারিত নামাজ আদায় করে, ইমাম খুতবার জন্য বের হওয়ার পর থেকে সালাম পর্যন্ত চুপ করে থাকে তার এই আমল আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত সব ছোট পাপ মোচন হবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)
নামাজে প্রথম আগমনকারীর সওয়াব
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশতারা অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। সবার আগে আগমনকারীর নামে একটি মোটাতাজা উট কোরবানির সওয়াব লেখা হয়। এরপর আগমনকারীর নামে একটি গাভী কোরবানির সওয়াব লিখা হয়। এরপর আগমনকারীর নামে মুরগি দানের সওয়াব লিখা হয়। অতঃপর ইমাম বের হলে ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বোখারি, হাদিস : ৯২৯)
সুরা কাহফ তিলওয়াত
জুমার দিনের একটি বিশেষ আমল হলো, সুরা কাহফ তিলওয়াত করা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করলে তা দুই জুমা তথা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত উজ্জ্বল আলোকরশ্মি হয়ে থাকবে। (আমালুল ইয়াওমী ওয়াল লাইল, হাদিস : ৯৫২)
দরুদ পাঠ করা
জুমার দিন অত্যাধিক দরুদ পাঠ করা সব মুমিনের কর্তব্য। রাসুল (সা.) বলেন, সর্বোত্তম দিবস হলো জুমার দিন। আদম (আ.)-কে এই দিন সৃষ্টি করা হয়। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়া হবে। এই দিনে পুরো সৃষ্টি জগতকে অজ্ঞান করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্স নিউজ