বিশ্ব অর্থনীতির চাপে একরকম পিষ্ট বাংলাদেশের রফতানি খাত। অর্থবছরের আটমাসে আয় বেড়েছে মাত্র তিন শতাংশ।
বাকি চার মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ। এমনকি, সুখবর নেই রফতানির সবচেয়ে বড় খাত তৈরি পোশাকেও। উদ্যোক্তারা বলছেন, এমন অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ি যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ব্রেক্সিটের মতো ঘটনা। তার ওপর নতুন সঙ্কট হিসেবে সামনে এসেছে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি।
এ অবস্থায় বিজিএমইএর দাবি, ডলারের বিপরীতে টাকার দাম সমন্বয় করার। গেলো কয়েক বছর ধরেই টালমাটাল বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি। শক্তিধর দুই দেশ আমেরিকা ও বৃটেনের দৃশ্যমান পরিবর্তনে নড়ে উঠেছে বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি। অঙ্কের হিসাব নিকাশও বলছে বিশ্ব অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তার গল্প।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, ২০১৫ সালের চেয়ে ২০১৬ সালে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি কমেছে দশমিক ৩ শতাংশ। একই সাথে জিডিপি প্রবৃদ্ধিও ছিল হতাশার। বছর ব্যবধানে যা কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ। রফতানির বড় দুই গন্তব্য, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের এমন পরিস্থিতি জোরালোভাবেই ধাক্কা দিয়েছে বাংলাদেশকে। যা উঠে এসেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে রফতানি বেড়েছে মাত্র সোয়া তিন শতাংশ।
যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ শতাংশ কম। তাই বাকি চার মাসে ৩৭ বিলিয়ন ডলার আয় করতে হলে মাসে রফতানি করতে হবে অন্তত সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার হারে। আর তা মেটাতে বড় ভরসা যখন তৈরি পোশাক খাত। সেখানেও জমে আছে দুশ্চিন্তার মেঘ। কারণ এ খাতে আয় বাড়ানো গেছে তিন শতাংশেরও কম।
দীর্ঘদিন ধরে ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশী টাকা। যা রফতানিকারকদের জন্য বয়ে আনছে বাড়তি দুশ্চিন্তা। রফতানি আয়ের এমন দুরবস্থায় নতুন সঙ্কট হিসেবে সামনে এসেছে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। এমন বাস্তবতায় ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ কিভাবে সম্ভব তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানালেন এই অর্থনীতিবিদ।
অবশ্য এই সময়ে কিছুটা আশা জুগিয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি। যা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। এছাড়া চামড়া খাতেও আয় বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।