কে এম মিঠু, টাঙ্গাইল || মধুপুরে সংঘটিত ৪ হত্যাকান্ডের রহস্যের কিনার হলো অবশেষে টাঙ্গাইলের মধুপুরের চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারে জড়িত থাকার অভিযোগে আটকদের একজন। অবশেষে টাঙ্গাইলের মধুপুরের চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের কূলকিনারা হলো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রবিবার এ রহস্যের কিনারা করতে সক্ষম হয়। খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সাগর এবং জোয়াদ আলী নামক দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

র‌্যাব-১২ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম আজ রবিবার সন্ধ্যা রাত আটটায় মধুপুর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্প চত্বরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, মূলত সুদের ধারদেনার টাকা নিয়েই এ খুন। পড়শি হিসাবে বিভিন্ন সময়ে গনির নিকট থেকে সাগর সুদে টাকা নিতো। বার বার সুদ পরিশোধ করা সত্যেও সুদের টাকার অঙ্ক কমছিলোনা। গত বুধবার দুইশ টাকার জন্য সে গনির বাসায় যায়। কিন্তু টাকা না দিয়ে তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার সঙ্গী জোয়াদুলকে সাথে নিয়ে ওই দিন রাত দশটায় তার বাসায় যায় এবং কৌশলে সকলকে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় খাবার খাওয়ায়। তারা অজ্ঞান হয়ে গেলে আব্দুল গনিকে জবাই করে এবং অপর তিনজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। বাসা থেকে মোবাইল, টেলিভিশন, কিছু কাপড়চোপড় ও নগদ টাকাপয়সা নিয়ে বাসায় তালা দিয়ে তারা সটকে পড়ে।

র‌্যাব জানায়, মোবাইল ট্র্যাকিং করে মধুপুর উপজেলার ব্রাহ্মণবাড়ী গ্রামের মৃত মোবারক হোসেন মকার পুত্র সাগর হোসেনকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে বোন মইফুলের ব্রাহ্মণবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত রান্নাঘরের গর্ত থেকে খুনের কাজে ব্যবহৃত ধারালো চাকু, লুটে নেয়া একটি এলইডি টেলিভিশন এবং কিছু কাপড়চোপড় উদ্ধার করা হয়। খুনের পরই মধুপুর পৌর শহরের বাসা থেকে পালিয়ে যায়। আশ্রয় নেয় বোন মইফুলের বাড়িতে। এদিকে মধুপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কামরান হোসেন জানান, এ চাঞ্চল্যকর মার্ডারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মধুপুর থানা পুলিশ সাগর হোসেনের কাকাতো ভাই জোয়াদ আলীকে আজ রবিবার দুপুরে মজিদআটার একটি কবরস্থান থেকে আটক করে। খুনের পরই গা ঢাকা দিয়ে ওই কবরস্থানে সে লুকিয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা সেলিম হোসেন জানান, সাগর একজন রিকসা চালক। মধুপুর পৌরশহরে বাসা ভাড়া নিয়ে সপরিবারে বসবাস করতো। নিহত আব্দুল গনির সাথে তার পরিচয় ছিল। তার বাসায় যাতায়াতও ছিল। সাগরের পড়শিরা জানান, সাগর বিবাহিত। দুই সন্তানের জনক। নেশাখোর হিসাবে এলাকায় চিহ্নিত। আব্দুল গনি যেহেতু রিকসা কেনাবেচার ব্যবসা করতো সেই হিসাবে পূর্ব পরিচয় ছিল। উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে মধুপুর পৌরসভার মাস্টার পাড়ার বাসায় দুর্বৃত্তের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন আব্দুল গনি, স্ত্রী কাজিরন বেগম, পুত্র তাইজুল ইসলাম এবং কন্যা সাদিয়া খাতুন। এ ঘটনায় গত শুক্রবার মধুপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন মধুপুর থানার ওসি (তদন্ত) ছানোয়ার হোসেন।

কে এম মিঠু, টাঙ্গাইল জেলা
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে