রাজধানীতে বেড়েছে কিশোর অপরাধ। পাড়া-মহল্লায় কিশোরদের মারিমারি ঘটনা এখন নিত্যদিনের। এ জন্য পরিবারের উদাসীনতা ও আশপাশের পরিবেশকে দায়ী করছেন, মনোবিজ্ঞানীরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, কিশোরদের অপরাধ রোধে, বিট পুলিশের মাধ্যমে রাজধানীর সব এলাকায় বাড়ানো হয়েছে, নজরদারি।

শিশু-কিশোরদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। বিশেষ করে রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় বিভিন্ন গ্রুপের তাণ্ডব ও সহিংসতা প্রায়ই উঠে আসে গণমাধ্যমে। দিন কিংবা রাত, ব্যস্ত কিংবা ফাঁকা সড়ক। রাজধানীতে সুযোগ পেলেই কার রেসিংয়ের নামে বেপরোয়া গাড়ি চালনায় মেতে উঠছে উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণদের বেশ কয়েকটি গ্রুপ। এছাড়া রাতে ফাঁকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে গিয়েও ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও পুলিশ বলছে, বেপরোয়া গাড়িচালনা ঠেকাতে রাতেও অভিযান চালান তারা। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতে ট্রাফিক পুলিশের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করা জরুরি।

মধ্যরাতের ঢাকা। একে একে কার রেসিং এর ৪টি গাড়ি ঢুকলো গুলশান থেকে বনানীমুখি সড়কে। গতি তোলার আগে একটুখানি শলা-পরামর্শ। টিম লিডারের হাতের ইশারা। তারপর পুলিশের চেকপোস্ট পেরিয়ে বনানী থেকে উত্তরা রোডে উঠতেই হঠাৎ দে ছুট। মুহূর্তেই বিপজ্জনকভাবে ৪টি গাড়ি চারদিক দিয়ে সাধারণ যানবাহনগুলোর ফাঁক গলে দৃষ্টিসীমার আড়ালে।

রাজধানীতে ফাকা রাস্তায় দ্রুতগতিতে কার রেসিংয়ের যেসব খবর শোনা যায় তার প্রমাণ পাওয়া যায় মধ্যরাতে একাধারে চার থেকে পাঁচটি গাড়ি একেবেকে রাস্তা অতিক্রম করা ঘটনায়। গাড়িগুলোর গতিও ছিলো একেবারে বিপজ্জনক। রাতে গতির ঝড় তোলার ফাঁকে রাজধানীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় জটলা পাকিয়ে রীতিমত দলভারি করতেও দেখা যায় ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন এসব চালককে। তবে তাদের ঘিরে নেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কোন তদারকি। তারা বলেন, ‘রাস্তায় কত গতিতে চালানো যাবে তার কোন নির্ধারিত সীমা নাই।

তাদের মধ্যে রিপোর্টারকে বলেন, ‘সেনানিবাস এলাকা ছাড়া আর কোন জায়গায় গতিসীমা আছে আপনি দেখান।’ রাজধানীতে এরকম বেপরোয়া গাড়ি চালনায় হতাহতের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আতংকিত সাধারণ মানুষ। পুলিশ বলছে, রাতে বেপরোয়া চালকদের দৌরাত্ম বন্ধে মাঝে মধ্যেই অভিযান চালান তারা।

ডিএমপির (ট্রাফিক) যুগ্ম কমিশনার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘কার রেসিংয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের সামনে পড়লে তাদের ধরে অনেক সময় মোটরযান আইনে মামলা করি। অনেক সময় গভীর রাতে আমরা চেক পোস্টও করে থাকি।’ তবে এই বিশেষজ্ঞ বলছেন, রাতের বেলাতেও পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে হবে ট্রাফিক পুলিশকে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল হক বলেন, ‘সংঘর্ষটা বেশি হয় রাতের বেলাতেই। এ সময় দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো হয়। পুলিশের দায়িত্বটাকেও এখন বাড়াতে হবে গভীর রাত পর্যন্ত।’ তিনি জানান, কঠোর ব্যবস্থা না নিলে রাস্তায় গাড়ির বেপরোয়া গতি বন্ধ করা যাবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে