ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতাঃ লকডাউন উপেক্ষা করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের সিনিয়র নায়েবে আমীর অন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী আলোচক মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারী নামাজে জানাযায় অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। এতে করে করোনার সংক্রামণ বাড়ার আশংকায় জেলার তিন উপজেলার ৮টি গ্রামকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।

এদিকে জানাযায় লোক সমাগম ঠেকাতে না পারার কারণে জেলার সরাইল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাসুদ রানা, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন, পরিদর্শক তদন্ত মো. নূরুল হককে প্রত্যাহার করা হয়েছে।এঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজিকে (প্রশাসন ও অর্থ) সভাপতি করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন)। কমিটিকে আগামী ২২ এপ্রিল ২০২০ তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার (১৮ এপ্রিল) সকাল থেকে ৮টি গ্রামে বসেছে পুলিশের কড়া পাহারা। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেক পোস্ট। সকাল থেকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে এলাকাবাসীকে ঘর থেকে বের না হতে গ্রামগুলোতে মাইকিং করা হচ্ছে।

হোম কোয়ারেন্টাইনের অন্তর্ভুক্ত গ্রামগুলো হচ্ছে, জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, বগইর, মৈশাইর, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শান্তিনগর, সীতাহরণ, বড়ইবাড়ি, বেড়তলা ও সদর উপজেলার মালিহাতা গ্রাম।

বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব দোকানপাটঃ
বড়ইর এলাকার মো. শাহীন মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানায়, মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাযায় আমরা কেউ যাইনি। তারপরেও আমরা আজ অবরুদ্ধ। তবে প্রশাসনের কথামত আমরা বাড়িতেই আছি। কেউ কোথাও যাচ্ছেনা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সরাইল (সার্কেল) মাসুদ রানা বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামের বাসিন্দাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই কারণে ৮ গ্রামের লোকজনের চলাফেরা কঠোরভাবে সীমিত করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, পুলিশ সদর দফতর থেকে তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জেনেছি। এই বিষয়ে এখনো কোনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান এবং জেলার শীর্ষ আলেমরা ছাড়াও মাদ্রাসা ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ যোগ দেন। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব মানার কথা থাকলেও বড় ধরনের জমায়েত হওয়ায় তা নিয়ে সমালোচনা চলছে।

জহির সিকদার
নিউজ ডেস্ক ।। বিডি টাইম্‌স নিউজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে